
বাংলাদেশ ও তুরস্কের অভিন্ন লক্ষ্য হচ্ছে ন্যায়বিচার, মানবাধিকারের সুরক্ষা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
শুক্রবার ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত তুরস্কের সাংবিধানিক আদালতের ৬৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক বিশেষ অধিবেশনে বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের বিচার বিভাগের পক্ষে তুরস্কের জনগণ এবং তাদের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান তথা তুরস্কের সাংবিধানিক আদালতকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান প্রধান বিচারপতি।
তিনি বলেন, ‘তুরস্কের সাংবিধানিক আদালতের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এ অনুষ্ঠান শুধু একটি ঐতিহাসিক উপলক্ষ্য নয় বরং এটি সাংবিধানিক আদর্শ ও ন্যায়বিচার রক্ষার প্রতিশ্রুতির একটি প্রতীকী উদযাপন।’
প্রধান বিচারপতি উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশের ও তুরস্কের সাংবিধানিক পথচলা ভিন্ন ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে গড়ে উঠলেও দুই দেশের অভিন্ন লক্ষ্য হচ্ছে ন্যায়বিচার, মানবাধিকারের সুরক্ষা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা।’
তিনি বলেন, ‘দেশ-জাতি নির্বিশেষে সাধারণ নাগরিকের জীবনে সংবিধানকে আরও কার্যকর ও অর্থবহ করে তুলতে হলে বিচার প্রক্রিয়াকে আরও সহজলভ্য, স্বচ্ছ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হবে।’
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বাংলাদেশের উচ্চ আদালত বিভিন্ন স্বপ্রণোদিত উদ্যোগের পাশাপাশি জনস্বার্থ মামলার মাধ্যমে যে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে, তা বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষার মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে।’
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বর্তমান যুগে সাধারণ মানুষের অধিকারের সুরক্ষায় সাংবিধানিক আদালতগুলোর আরও বিস্তৃত দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা প্রয়োজন। বিশেষ করে, জলবায়ু ন্যায়বিচার, ডিজিটাল অধিকার ও তথ্য সুরক্ষা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও আন্তঃদেশীয় বৈষম্য মোকাবিলায় বিশ্বের প্রতিটি দেশে এমন একটি ন্যায়বিচার কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা জরুরি যা একদিকে নিজস্ব বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে, তেমনি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায়ও প্রাসঙ্গিক ভূমিকা পালন করবে।’
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের বিচার বিভাগের প্রতিনিধিবৃন্দ ও আইনজ্ঞদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এই সফর এমন একটি সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন বাংলাদেশের বিচার বিভাগ একটি সুদূরপ্রসারী ও কাঠামোগত সংস্কারের পথে ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘তুরস্কের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশ আরও দৃঢ়ভাবে বিচার বিভাগীয় সম্পর্ক ও সহযোগিতা গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।’
আরও পড়ুন: