প্রেক্ষাপট
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট লক্ষ-লক্ষ মানুষের ধাওয়া খেয়ে প্রাচীন বাংলার রাজা লক্ষণসেনের মতো তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশ এখনো শেখ হাসিনার রাহুমুক্ত হয় নি। বর্তমান জনপ্রশাসন, বিশেষ করে ‘বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার’ভুক্ত অধিকাংশ সদস্য আওয়ামীপন্থী ও শেখ হাসিনার পক্ষে পুরোপুরি সক্রিয় থাকায়- নোবেল শান্তি পুরস্কারবিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিশ্রুত রাষ্ট্রসংস্কার কার্যক্রম স্থবির ও অকার্যকর হওয়ার উপক্রম হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য মতে, বর্তমান জনপ্রশাসন আওয়ামী সমর্থকদের নিয়ন্ত্রণে থাকায়- রাষ্ট্রীয় প্রায় সবপ্রতিষ্ঠানে এখন একটা নৈরাজ্য বিরাজ করছে। আওয়ামী সমর্থকদের নিয়ে গড়া জনপ্রশাসন, বর্তমান সরকারকে প্রায় নিষ্কৃয় করে রাখার অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু, বাংলাদেশের জনপ্রশাসন তথা আমলাতন্ত্রে- এই সংকটের নেপথ্যে মূল কারণ কি? এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার কোনো উপায় আছে কি? জর্জিয়ার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের জন্য কতটা উপযোগী হতে পারে, কীভাবে?
এই নিবন্ধে- ২০১৭ সালের জুলাই মাসে জর্জিয়ার রাজধানী টিবলিসে দু’সপ্তাহ অবস্থান করে (অস্ট্রিয়ার অ্যান্টিকরাপশন অ্যাকাডেমিতে দু’বছর মেয়াদি ’মাস্টার্স ইন অ্যান্টকরাপশন’ অধ্যায়নকালে) জর্জিয়ায় ‘রোজ রেভ্যুলেশন’-পরবর্তী কার্যকর এবং টেকসই রাষ্ট্রসংস্কার কার্যক্রম সরজমিনে পর্যবেক্ষণ, লব্ধ অভিজ্ঞতা ও অভিজ্ঞানের আলোকে- এসব প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করেছি।
বিশ্বব্যাপি ’প্রচলিত আমলাতন্ত্র’
বাংলাদেশসহ সাবেক বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসনে থাকা বৃটিশ কমনওয়েলথভুক্ত ৫৬টি রাষ্ট্রের সরকারি প্রশাসন ও রাষ্ট্রীয় জনসেবা কার্যক্রম মূলত বিশাল আকারের জনবল দিয়ে গড়া আমলাতন্ত্র-নির্ভর; আরো স্পষ্টভাবে যায়- প্রশাসন ক্যাডার (যেমন- বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিসিএস প্রশাসন) সার্ভিস-কেন্দ্রিক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপ মহাদেশের অধিকাংশ দেশের সরকারি প্রশাসন ছোট পরিসরের। যুক্তরাষ্ট্রে ডেমোক্রেটিক বা রিপাবলিকান- এই দু’টি দলের কোনো একটি দল ক্ষমতায় আসার পর নিজেদের লোকদিয়ে সরকারি প্রশাসন ঢেলে সাজায়। পরবর্তীতে ভিন্ন দল ক্ষমতায় এলে- আগের প্রশাসনের অধিকাংশ জনবল পরিবর্তন করা হয়। এই প্রক্রিয়াটি ‘স্পয়েল সিস্টেম’ নামে পরিচিত। ফলে, এই ব্যবস্থায় বিশেষ কোনো দলীয় লেজুরবৃত্তিক আমলাতন্ত্র বা প্রশাসন গড়ে ওঠার সুযোগ কম থাকে।
কিন্তু, বৃটিশ কমনওয়েলথ রাষ্ট্রগুলোর সরকার মূলত বিশাল আকারের স্থায়ী জনপ্রশাসন তথা আমলাতন্ত্র-নির্ভর। অনেক ক্ষেত্রে, কোনো কোনো দেশে ক্ষমতাসীন সরকার নিজেদের দলীয় রাজনৈতিক মতাদর্শের লোকদিয়ে জনপ্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করে। এভাবে, দলীয়করণের ফলে- জনপ্রশাসনের একাংশ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে। এর পাশাপাশি নতুন কোনো সরকারের জনপ্রতিশ্রুতি বা ম্যানডেট বাস্তবায়নের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে দেখা যায়। অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার এই মুহুর্তে- ঠিক এমনই এক পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন। ড. ইউনূসের সদিচ্ছা থাকলেও জনপ্রশাসনে আওয়ামী লীগের মতাদর্শের অনুসারীদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে- জনপ্রশাসন-নির্ভর রাষ্ট্রীয় সংস্কার কার্যক্রম প্রায় স্থবিরতা তৈরি হয়েছে। নানা কৌশলে আওয়ামী লীগ প্রভাবিত জনপ্রশাসন বর্তমান সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যপূরণ ব্যাহত করায়- প্রত্যাশামতো রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রম এগুচ্ছে না বলে তথ্য রয়েছে।
মূল প্রসঙ্গ: কীভাবে কম সময়ে জনপ্রশাসন সংস্কার?
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের বেলায় লক্ষ করা যাচ্ছে- রাষ্ট্র সংস্কারে প্রধান-প্রধান বাধা- জনপ্রশাসন বিশেষ করে বিসিএস প্রশাসন। উল্লেখ্য, ২০০৯ থেকে মে ২০২৪ পর্যন্ত বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন বা পিএসসি কর্তৃক অনুষ্ঠিত মোট ১৫টি বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে প্রায় ৩৮ হাজার (সরকারি প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত সংখ্যার সংক্ষেপিত তথ্য মোতাবেক) কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে- যাদের ৯৫ শতাংশেরও বেশি আওয়ামী লীগের ক্যাডার, সমর্থক ও পোষ্য। এই ক্যাডারে বিগত ১৬ বছরে এমনভাবে আওয়ামী লীগের ক্যাডার, সমর্থক ও নেতাকর্মীদের সন্তান ও নাতি-পুতিদের বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে বাছাই করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে যে- তারা আগামী ৩০-৩৫ বছর এই দলটির মুখোপাত্র হয়ে কাজ করবে। আওয়ামী লীগ মতাদর্শের লোকজন বিসিএস প্রশাসন ও পুলিশ ক্যাডারে অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই), সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা (ডিজিএফআই) এবং মাঠ পর্যায়ের পুলিশ ও প্রশাসনের পাশাপাশি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ’র’ এর সদস্যদের ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে। এর মূল লক্ষ্য ছিলো- আওয়ামী লীগ ও ‘অখণ্ড ভারতীয়’ ভাবাদর্শের প্রতি সহানুভূতিশীল আমলাতন্ত্র সৃষ্টি করা। এক্ষেত্রে শেখ হাসিনার সরকার সফলও হয়েছে। এসবের ’মাস্টারমাইণ্ড’ হলেন- প্রয়াত সাবেক আমলা এইচ টি ইমাম।
বর্তমান সরকার কীভাবে জর্জিয়ার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে পারে?
বাংলাদেশ বিরাজমান বর্তমান অবস্থা থেকে দ্রুত উত্তরণের জন্য ড. ইউনূসের সরকারকে ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশের মধ্যবর্তী দেশে জর্জিয়ার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানো যেতে পারে। আমি এ ব্যাপারে Rezaul Voice ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত একটি ভিডিওতে (https://youtu.be/tz2QA2hrmjg?si=gBrKxPvdWVio6XuI) মাত্র ৩৬ বছর বয়সী ইউক্রেনের নাগরিক মিখাইল সাকাশভিলি’র নেতৃত্বে জর্জিয়ার সফল রাষ্ট্রসংস্কার নিয়ে কথা বলেছিলাম। জর্জিয়ায় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানের (’রোজ রেভ্যুলেশন’ নামে খ্যাত) পর মাত্র ছয়মাসের মধ্যে দেশটির পুরো পুলিশ, প্রশাসন ও বিচার বিভাগের অধিকাংশ সদস্যকে বহিষ্কার করে নতুনদের স্থলাভিষিক্ত করা হয়। দুর্নীতি ও ক্ষমতা অপব্যবহারের অভিযোগ ছিলো- এমন আমলাদের চাকরিচ্যূতি, বাধ্যতামূলক ও অকালীন অবসরে পাঠানো হয়।
জর্জিয়ার পুলিশ, প্রশাসন ও বিচার বিভাগের অর্থবহ ও কার্যকর পুনর্গঠনের লক্ষ্যে- এসব বিভাগের নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা, শুন্যস্থানপূরণ ও প্রশিক্ষণ শেষে কাজে যোগদান দ্রুত ত্বরান্বিত করতে মিনিস্ট্রি অব জাস্টিস (www.justice.gov.ge) নামে একটি আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করা হয়। সাকাশভিলি’র অনুরোধ ও আহ্বানে সাড়া দেওয়া বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরামর্শক ও নিয়োগ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে মিনিস্ট্রি অব জাস্টিস এর অধীনে একটি প্যানেল করা হয়। মাত্র তিনমাসের মধ্যে এই প্যানেল জনবল নিয়োগযজ্ঞ (যথা- বাছাই পরীক্ষা গ্রহণ, নিয়োগের জন্য সুপারিশসহ নিয়োগপ্রাপ্তদের প্রশিক্ষণ ও যথাস্থানে পদায়ন, ইত্যাদি) কাজ দ্রুত এবং দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতসাথে সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আওয়ামী জনপ্রশাসন থেকে বেশিরভাগ বহিষ্কার ও তদস্থলে নিয়োগ দেওয়া সহজ হবে না। তবে, বিল্পবী সরকারের সদিচ্ছা থাকলে- যতোই বাধা থাকুক না কেনো, জর্জিয়ারমতো বাংলাদেশেও তা করা সম্ভব। তবে, আমার মতে বিষয়টা কয়েকটি মোটাদাগে এই মহাজজ্ঞ একইসাথে আলাদাভাবে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে, যেমন-
প্রথমত: ২০০৯ থেকে মে ২০২৪ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত মোট ১৫টি বিসিএস পরীক্ষার ফলাফল পুনমূল্যায়নের জন্য জুলাই-আগস্ট বিল্পবের চেতনায় বিশ্বাসী এমন কয়েকজন ব্যক্তির সমন্বয়ে একটি কমিশন করতে হবে। এই কমিশন এসব বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ প্রাপ্তদের পিএসসি কর্তৃক আয়োজিত লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বরের অসামঞ্জস্যতা ও অস্বাভাবিকতা, এবং জেলা ও মুক্তিযোদ্ধা কোটার অধীনে নিয়োগপ্রাপ্তদের প্রকৃত জেলা ও মুক্তিযোদ্ধা সনদ যাচাই করে দেখবে। যাদের ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক ফলাফল পাওয়া যাবে এবং ভুয়া জেলা ও মুক্তিযোদ্ধা সনদ ব্যবহার করে বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে জনপ্রশাসনের চাকরিতে প্রবেশের দালিলিক প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদেরকে জনপ্রশাসন থেকে দ্রুত বহিষ্কার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট শূন্যপদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য একটি বিশেষ বিসিএস পরীক্ষা আয়োজন করতে হবে- যেটি পিএসসি ও ব্র্যাকের মতো স্বনামধন্য বেসরকারি এক বা একাধিক প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথভাবে বাস্তবায়ন যেতে পারে। উল্লেখ্য, ব্র্যাক এর সারাদেশে বিশাল আকারের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে- যেগুলোর সুবিধা রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে দ্বিপাক্ষিক (পাবলিক-প্রাইভেট) চুক্তির অধীনে কাজে লাগানো যেতে পারে।
দ্বিতীয়ত: বর্তমান পাবলিক সার্ভিস কমিশনকে পুরোপুরি পুনর্গঠন করতে হবে। অতিসম্প্রতি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সরিয়ে পিএসসিকে সংস্কারের নামে শুধু রি-ফিল করতে দেখো গেছে (www.banglaedition.com/opinion/2024/10/14/230846)। দশকের দশক ধরে পিএসসি’র গাড়ি চালক থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠানটির পুরো প্রশাসনিক জনবল বিসিএস পরীক্ষাসহ অন্যসব পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস এবং নিয়োগে দুর্নীতিতে জড়ি্ত থাকার অভিযোগ ও দালিলিক প্রমাণ গণমাধ্যমে প্রকাশিত বা প্রচারিত হয়েছে। ড. ইউনূসের সরকারের কাছে অনুরোধ- পিএসসি’র সচিবালয়কে পুরোপুরি পুন:স্থাপন করুন। যোগ্য ও সততার সাথে দায়িত্ব পালনের রেকর্ড আছে- এমন ব্যক্তিদের সরকারি অন্য সংস্থা থেকে বদলির মাধ্যমে পিএসসির সচিবালয়ে দ্রুত পদায়ন করুন, অন্যথায়- পিএসসি দুর্নীতিমুক্ত হবে না। পিএসসি হলো- জনপ্রশাসনে প্রবেশদ্বার। এটার সক্ষমতা, সততা ও কার্যকরতা সবার আগের দরকার।
তৃতীয়ত: পুনর্গঠিত কর্ম কমিশনকে দিয়ে জর্জিয়ার অভিজ্ঞতার আলোকে মাত্র তিনমাসের মধ্যে নতুন অন্তত ২০ হাজার বিসিএস ক্যাডার ও নন-ক্যাডার জনবল নিয়োগ সম্পন্ন করতে সর্বোচ্চ ২০০ নম্বরের একটি মাল্টিপল কুইজ-নির্ভর পরীক্ষা ও ৫০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষাসহ একটি বিসিএস পরীক্ষা আয়োজনের প্রস্তাব করছি। উল্লেখ্য, মুখস্তবিদ্যা-নির্ভর বর্তমান বিসিএস পরীক্ষার ৬০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা শেষ করতে এক বছরেরও বেশি সময় পার হয়। প্রকৃত মেধা যাচাইয়ের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও কার্যকর পরীক্ষা, যেমন- জিআরই, জিম্যাট ও স্যাট মতো পরীক্ষা সাজাতে হবে। জিআরই, জিম্যাট বা স্যাট পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরি সাথে বিশেষজ্ঞ ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তা প্রার্থনা করতে হবে। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস অনুরোধ করলে- ইতিবাচক সাড়া বলে আমি ১০০ ভাগ নিশ্চিত। জর্জিয়ায় সাকাশভিলি এই কাজটিই করেছেন, যে সেক্টরের সংস্কারের জন্য যেসব লোক ও বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন বিশ্বের সাথে কাছে সেসব ব্যাপারে সহায়তা চেয়েছেন। দেশটির শিক্ষা ও অর্থনীতি সংস্কারের জন্য হার্ভার্ড ও ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বখ্যাত
অধ্যাপক, গবেষক ও বিভিন্ন দেশের পরামর্শকদের অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিনাপারিশ্রমিকে কাজে লাগিয়েছেন। ড. মুহাম্মদ ইউনূসও এরকম আহ্বান করলে- উনি ইতিবাচক সাড়া পাবেন বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। তবে, এই কাজে ওনার সহযোগী হিসেবে একটি বিল্পবী টিম লাগবে; গতানুগতিক ধারার লোক দিয়ে এসব হবে না, কারণে তাদের অনেকে ‘ইগো’ বা হীনমন্যতায় ভুগে।
উপসংহার: জুলাই-আগস্টের বিল্পব-পরবর্তী বাংলাদেশ পুনর্গঠন করতে হলে- সবার আগে বিদ্যমান আওয়ামী প্রশাসনকে অবিলম্বে পুনর্গঠন ও প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে পুনস্থাপন করতে হবে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কারে পৃথিবীতে অনন্য নজীর স্থাপনকারী ও সফল রাষ্ট্র জর্জিয়ার অভিজ্ঞতাকে বিবেচনা-পূর্বক প্রয়োজনীয় ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া অতীব প্রয়োজন।
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার সফল হলে- গত জুলাই-আগস্ট মাসে শেখ হাসিনার নির্দেশে পুলিশ ও আওয়ামী ক্যাডারদের হাতে নিহত শহীদ আবু সাঈদ ও মুগ্ধসহ হাজারেরও বেশি ছাত্র-জনতার জীবন উৎসর্গ অর্থবহ হবে। জর্জিয়ার সফল ‘গোলাপী বিল্পব’ এর অভিজ্ঞতাকে বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশের জনপ্রশাসনসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থবহ, কার্যকর ও টেকসই সংস্কার হোক- এটা বিল্পবের চেতানায় বিশ্বাসী সবার প্রত্যাশা। এটা করতে পারলে- বাংলাদেশের ওপর অক্টোপাশের মতো ভর করে থাকা ভারত ও শেখ হাসিনার রাহু থেকে বাংলাদেশ অচিরেই মুক্ত হবে, ইনশাআল্লাহ।
লেখক- মো. রেযাউল করিম
গবেষক- ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (২০০৬-’২১)
পিএইচডি কেনডিডেট- মালায়া বিশ্ববিদ্যালয়, মালয়েশিয়া
মাস্টার্স- অ্যান্টিকরাপশন স্টাডিজ, অস্ট্রিয়া
লাইসেন্সড প্রডিউসার- প্রপার্টি অ্যান্ড ক্যাজুয়ালটি ইন্সুরেন্স, নিউ ইয়র্ক
ই-মেইল: [email protected]
আরও পড়ুন: