"আমাকে যদি ভোট না দেন তাহলে আপনার গোয়ালের গরু ছাগল হারালে আমি দ্বায়ী না"। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগে এক গরু চোর ক্রিমিনাল মেম্বার প্রার্থী ঠিক এভাবেই ভোটের প্রচারণা চালিয়ে জয়ী হতে চাইতেন।
চুরি যে অন্যায়, সাথে পাপ তা নিয়ে তার কোন অনুশোচনা তো নাই- বরঞ্চ ব্লাকমেইল ক্রিমিনালি করে হলেও ক্ষমতায় যেতেই হবে বা থাকতে হবে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বড় দুইটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিগত পতিত সরকারের আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের মধ্যে এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি, তাদের দলীয় প্রধানসহ বেশির ভাগ নেতাকর্মীই ক্রিমিনাল আর সেই কারণে আওয়ামী লীগ এখন আর রাজনৈতিক দল নয়, এই দল এখন "এ গ্যাংস অফ ক্রিমিনাল"।
বিখ্যাত দার্শনিক সক্রেটিস বলেছেন "অন্যায় করে লজ্জিত না হওয়া টা আর একটা অন্যায়" যা আওয়ামী লীগের সমর্থকদের সাথে মিলে যায়।
মোটামুটি সহনশীল জনবান্ধন বিরোধী দল থাকায় জনগণের ভোটের অধিকারের তোয়াক্কা না করে ১৭ বছর ধরে জোর করে ক্ষমতা থাকার পর, গত ৫ই আগষ্ট ছাত্রজনতার প্রবল জনরোষের কারণে ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে গেলে আওয়ামী সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। কিন্তু তারা তাদের এই পরাজয় কে কোন ভাবেই মেনে নিতে পারে নাই বা পারছে না।
বহু আওয়ামী সমর্থকদের ফেসবুকে পোস্ট দেখেছি এখনো দেখি এমনকি সরাসরি কয়েকজন সমর্থকের সাথে কথা বলে দেখেছি কিন্তু কাউকে লিখতে বা বলতে শুনিনি যে এই অন্যায়ের জন্য তারা খুব অনুতপ্ত !! যদিও দুই একজন সমালোচনা করার চেষ্টা করেছেন কিন্তু "এ গ্যাংস অফ ক্রিমিনাল" এর পক্ষ থেকে সেই সমালোচনাকারী কে সামাজিকভাবে হেয় করা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত চরিত্র হরণ সহ এমন কোন অপবাদ নাই যে তাকে দেওয়া হয় না তার বাস্তব উদাহরণ জনাব সোহেল তাজ।
এই ফ্যাসিস্ট দোসরদের মতে ঐসকল হত্যাকান্ডের দায় ড. ইউনুসের। আন্দোলনের নামে জঙ্গিপালন ও জ্বালাও-পোড়াও করাই ছিল ইউনুসের মেটিকুলাস প্ল্যান।
- এইসকল ফ্যাসিস্ট সমর্থক
-কোন আওয়ামীকে আমি বলতে শুনিনি আবু সাঈদ, মুগ্ধ সহ শত শত নিরীহ ছোট ভাইদের করুণ মৃ'ত্যুতে তারা ভীষণ মর্মাহত। আমি কোন আওয়ামীকে বলতে শুনিনি দেশ থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার পাচার হওয়াতে তারা খুবই দুঃখিত।
আমি কোন আওয়ামীকে বলতে শুনিনি যে, বিচার বহির্ভূত গুম, খুন ও আয়না ঘরে বছরের পর বছর আটকে রেখে একজন মানুষের প্রতি নির্মম অবিচার খুবই দুঃখজনক!!
আমি শুধুই তাদের বলতে শুনেছি,,,,,
"দেখবো ইউনুস কয়দিন চালায়"
"আগের সরকারই ভাল ছিল"
"এই স্বাধীনতা কি জনগণ চেয়েছিল"
"দেশ ২০ বছর পিছিয়ে গেল"
"আয়না ঘরে আয়না কই?"
"ভোটে নির্বাচিত সরকারকে অসংবিধানিকভাবে উৎখাত করা হয়েছে "
"পাকিস্তানি বীজ রাজাকারের বাচ্চারা দেশটা ধ্বংস করে দিল"
আসলে আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে,
একটি দলের প্রতি ভালবাসা থাকা মানেই কি এটা যে আমরাই সঠিক আর বাকীরা সব বেঠিক?
একটি দলের প্রতি ভালবাসা থাকা মানেই কি, আমার কোন বিবেক থাকবেনা, আমাকে খুব পাষাণ হৃদয়ের অধিকারী হতে হবে, দেশের মানুষের প্রতি আমার কোন মায়া থাকা যাবেনা ?
একটি দলের প্রতি ভালবাসা থাকা মানেই কি, আমার নেতা নেত্রী ফেরেস্তা সমতুল্য এবং তারা সকল ভুলের উর্ধ্বে?
ধিক্কার ঐ সমস্ত দলকানা অন্ধ বিবেকহীন রাজনৈতিক কর্মী, নেতা ও সমর্থকদের যাদের কোন অনুশোচনা নেই এবং নেই নিজ জাতি ও দেশের প্রতি মায়া ভালবাসা আন্তরিকতা। এখন প্রায়ইশ গর্ত থেকে মুখ বের করছে শেখ হাসিনার সমর্থকগণ। আর তাদের মুখ দিয়ে বের হচ্ছে পশ্চাৎদেশের বায়ু। উহুহু কী দুর্গন্ধ!!
লেখক: ফজলে রাব্বী পলাশ, বাংলা এডিশন।
আরও পড়ুন: