বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে জুলাইয়ের ১৯ তারিখে ঢাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হয় ফার্নিচার মিস্ত্রি হৃদয়। মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার হাওলাদারকান্দি গ্রামের শাহ আলমের ছেলে তিনি। ঘটনার পর নিহত হৃদয়ের পরিবারের খোঁজ নেয়নি ছত্র-জনতা, রাজনৈতিক দল অথবা সরকার।
হৃদয়ের বাবা শাহ আলম এমন অভিযোগ করে বাংলা এডিশনকে জানান, হৃদয়ের মৃত্যুর দেড় মাস পার হলেও কোনোরকম সহায়তা পায়নি তার পরিবার।
তিনি জানান, হৃদয় তার একমাত্র সন্তান। সন্তান হারিয়ে তিনি পাগল প্রায়। সন্তান নিহত হলেও ওই ঘটনায় কার বিরুদ্ধে মামলা দেবেন তা তিনি জানেন না। যে কারনে সন্তান হত্যার ঘটনায় মামলা করেননি তিনি।
তবে হৃদয়ের বাবা মামলা না করলেও শাহাদাত হোসেন খান নামের একজন বাদী হয়ে ১৬১ জনকে আসামি করে রামপুরা থানায় মামলা দিয়েছেন। হৃদয়ের হত্যার ঘটনাটি ঢাকায় ঘটলেও মামলায় যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের প্রায় সকলের ঠিকানা মাদারীপুরের শিবচরে।
এই মামলা থেকে নাম কাটানোর কথা বলে ব্যাপক চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টির সম্পর্কে জানতে মামলার বাদীর সঙ্গে কথা বলতে মাদারীপুরের শিবচরে যায় বাংলা এডিশন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যায়নি মামলার বাদী শাহাদাত হোসেনকে।
তবে জানা যায় শাহাদাত শিবচর উপজেলার সাবেক কাউন্সিলর। মামলা থেকে নাম কাটানোর কথা বলে এলাকায় ব্যাপক চাঁদাবাজি করেছেন বলে অভিযোগ দিলেও ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হয়নি কেউ।
শাহাদাত হোসেনের মত ওই এলাকার নুরুদ্দীন মোল্লা নামের আরেকজনের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ।
ভুক্তভোগীরা জানান, নুরুদ্দীন মোল্লা ও শাহাদাত হোসেন ঢাকার ঘটনায় এলাকার মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে এবং মামলার ভয় দেখিয়ে এলাকার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নিকট থেকে চাঁদা আদায় করেছেন।
ভুক্তভোগী বেলায়েত মোল্লার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি ১৬ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত চীনে অবস্থান করেছেন। ঘটনার সময় তিনি দেশে না থাকলেও তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। কি কারণে এবং কে মামলা করেছেন সেই তথ্য জানেন না তিনি। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন বলে দাবি করছেন বেলায়েত।
নুরুদ্দীন মোল্লাকে পাওয়া না গেলেও তার অফিস সহকারী জানান, তিনি ঢাকায় আছেন।
মোবাইল ফোনে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কথা বলতে রাজি হয়নি শাহাদাত হোসেন।
মামলার ভয় এবং বিগত ১৫ বছরে বিভিন্ন অপরাধে লিপ্ত থাকায় মাদারীপুরের শিবচরের আওয়ামী লীগ নেতাদের বেশির ভাগই রয়েছেন আত্মগোপনে।
আরও পড়ুন: