সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও খামারিদের সঠিক তালিকা প্রণয়ন করে আগামী ফসল না ওঠা পর্যন্ত তাদের সর্বাত্মক ত্রাণ সহায়তা দেয়ার দাবি জানিয়ে বিএনপি।
দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আগামী ফসলের জন্য সুদমুক্ত কৃষি ঋণ প্রদান ও বিনামূল্যে সার, বীজ, কীটনাশক, সেচের তেলের ব্যবস্থা করা উচিত সরকারের।
রবিবার নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে এই দাবি তুলে ধরা হয়।
রিজভীর অভিযোগ করে বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা ও প্রবল বর্ষণে জলাবদ্ধতায় সৃষ্ট দুর্ভোগ নিরসনে সরকারের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। বন্যায় কৃষক ও খামারিদের অতি দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বন্যাকবলিত মানুষ ও তাদের পরিবারের দুরবস্থার বিষয়টি নিরসনে সরকারকেই প্রধান ভূমিকা রাখতে হবে। বাজারে নিত্যপণ্যের দাম ঠিক রাখতেও সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। সার, কীটনাশক ও বীজের সরবরাহ বাড়িয়ে কিংবা প্রণোদনা দিয়ে কৃষক ও খামারিদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির পক্ষ থেকে বেশ কিছু দাবি তুলে ধরেন রুহুল কবির রিজভী।
দাবিগুলো হলো—
১. বন্যার পানিতে যাদের জমির ফসল বিনষ্ট হয়ে গেছে তাদের সঠিক তালিকা প্রণয়ন করে আগামী ফসল না ওঠা পর্যন্ত তাদেরকে সর্বাত্মক ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা।
২. আগামী ফসলের জন্য সুদমুক্ত কৃষি ঋণ প্রদান ও বিনা মূল্যে সার, বীজ, কীটনাশক, সেচের তেলের ব্যবস্থা করা।
৩. আগামী ফসলের আগে রবি শষ্য উৎপাদনের জন্য তাদের মধ্যে রবি শষ্যের বীজ প্রদান করা।
৪. বন্যার পানিতে যেসব মৎস্য, হাঁস-মুরগি, গবাদি পশুর খামার বিনষ্ট-মৎস্য, হাঁস-মুরগি গবাদি পশু ধ্বংস হয়ে গেছে, তাদের সঠিক তালিকা ও ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করে পুনরায় খামার প্রতিষ্ঠার জন্য তাদের সুদমূক্ত ঋণসহ অন্যান্য সহায়তা প্রদান করা।
৫. বন্যার পানিতে যাদের বাড়ি-ঘর আংশিক ও পূর্ণাঙ্গ ধ্বংস হয়ে গেছে, তাদের তালিকা তৈরি করে ঘর-বাড়ি পুনর্নির্মাণে সহায়তা প্রদান করতে হবে।
৬. নদীর বাঁধ ভেঙে যেসব গ্রাম-পাড়া-মহল্লা বিলীন হয়ে গেছে, সেসব স্থানে বসবাসকারীরা বর্তমানে উদ্বাস্তু হয়ে গেছে, তাদেরকে সরকারি খাস জমিতে /আশ্রয়ণ প্রকল্পে স্থানান্তরিত করা।
৭. যেসব বাঁধ, রাস্তা, মসজিদ, মাদরাসা, মন্দিরসহ অন্যান্য ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আংশিক ও পুর্নাঙ্গ ধ্বংস হয়ে গেছে, সেগুলো সংস্কার ও পুণঃনির্মাণ করা।
৮. বন্যার পানিতে যেসব ছাত্রছাত্রীর শিক্ষা সামগ্রী বিনষ্ট হয়ে গেছে, তাদেরকে সরকারি উদ্যোগে শিক্ষা সামগ্রী ও সহায়তা প্রদান করা।
৯. বন্যার পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে রোগ-বালাইগ্রস্ত মানুষের জন্য সরকারি হাসপাতালে বিনা মূল্যে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
১০. প্রয়োজনে এলাকাভিত্তিক মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করে চিকিৎসা দিতে হবে।
আরও পড়ুন: