
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, রাষ্ট্র মেরামতে অন্তবর্তীকালীন সরকারের কত দিন সময় লাগবে তা জানতে চাওয়ার অধিকার জনগণের রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে রোডম্যাপ ঘোষণার কথা শুনলে উপদেষ্টাদের চেহারায় অস্বস্তির ছাপ ফুটে ওঠে, যা জনআকাঙ্ক্ষা বিরোধী।
রোববার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বিএনপি আয়োজিত মহান বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
একই সঙ্গে, সব অস্পষ্টতা কাটিয়ে অচিরেই নির্বাচনি রোডম্যাপে প্রিয় বাংলাদেশ যাত্রা শুরু করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এ যাত্রায় আপনাদের সঙ্গী হচ্ছে এ দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ। সুতরাং আপনারা জনগণের সঙ্গে থাকুন, জনগণকে সঙ্গে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি উপস্থিত হয়ে বক্তব্য দেন তারেক রহমান। এ সময় দলের সিনিয়র নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
তারেক রহমান তার বক্তব্যে বলেন, লাখো প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত গৌরবময় এ বিজয়ের ৫৪তম বার্ষিকীতে স্বাধীনতাকামী জনগণকে জানাই বিজয়ের আন্তরিক শুভেচ্ছা। স্বাধীনতার জন্য আত্মত্যাগ করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধা। সাম্য, মানবিক মর্যাদা, মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৭১ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিলেন। তবে তাবেদার অপশক্তি বারবার এই দেশকে বিপদে ফেলার ষড়যন্ত্রের ফাঁদ পেতেছিল; বিশেষ করে পলাতক স্বৈরাচার বাংলাদেশের বিপন্ন গৌরব অর্জনকে বিকিয়ে দিতে চেয়েছিল। দেড় দশক ধরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার গৌরব ও সম্মান বিকিয়ে দিয়েছিল। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট তাবেদার মাফিয়া চক্রের সরকার পালিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে জনগণের স্বাধীনতা রক্ষা পেয়েছে।
তিনি বলেন, জনগণের স্বাধীনতা রক্ষা, ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশে এবারের বিজয় দিবস অনেক গৌরবের, অনেক বেশি অর্থবহ ও তাৎপর্যপূর্ণ। আমি বিশ্বাস করি, আগামীতে স্বাধীনতা দিবস শুধু উদযাপনের মধ্য দিয়ে সীমাবদ্ধ থাকবে না, রাখা যাবে না।
গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দু জনগণ উল্লেখ করে বিএনপি নেতা বলেন, জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি দ্বারা সরকার গঠিত হলে, জবাবদিহি কার্যকর থাকলে জনগণের অধিকার নিশ্চিত থাকে।
তারেক রহমান আরও বলেন, জনগণ দেখেছে কীভাবে জনগণের অধিকার হরণ করা হয়েছিল, হরণ করা হয়েছিল ভোটের অধিকার। জনপ্রতিনিধি নির্বাচন একেবারে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল।
সংস্কারের প্রসঙ্গ টেনে তারেক রহমান আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কী করতে চাইছেন? রাষ্ট্র ও সমাজ মেরামত করতে কত সময় প্রয়োজন, সেটি জানার অধিকার জনগণের রয়েছে। সরকার আগামী দিনের রোডম্যাপ ঘোষণা করলে এটা
একদিকে জনগণের কাছে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাকে নিশ্চিত করবে। প্রশাসনিক কার্যক্রমে গতিশীলতা বাড়বে। অন্তর্বর্তী সরকারের আগামী দিনের রোডম্যাপের কথা শুনলেই উপদেষ্টাদের চেহারায় যদি অস্বস্তির ছাপ ফুটে ওঠে, তবে সেটি হবে গণআকাঙ্ক্ষা বিরোধী। সরকার তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে জনগণের কাছে যত বেশি স্বচ্ছ থাকবে জনগণও তাদের প্রতি সমর্থনের হাত প্রসারিত করে দেবে।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান প্রমুখ।
আরও পড়ুন: