শনিবার

১৯ এপ্রিল, ২০২৫
৬ বৈশাখ, ১৪৩২
২২ শাওয়াল, ১৪৪৬

গাজীপুরে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার নেপথ্যে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা নকিব আশরাফ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ১৬:১৯

আপডেট: ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ১৬:২০

শেয়ার

গাজীপুরে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার নেপথ্যে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা নকিব আশরাফ
ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুর মহানগরের ধীরাশ্রম এলাকায় অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে শুক্রবার রাতে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা ভাঙচুর চালাতে যায়। এ সময় ‘ডাকাত পড়েছে’- মাইকে এমন ঘোষণা দিয়ে স্থানীয়দের ভুল বুঝিয়ে উত্তেজনা তৈরি করে কিছু আওয়ামী সন্ত্রাসী পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ছাত্র-জনতাকে হামলা করে গুরুতর আহত করে।

হামলার রাতেই গাজীপুরের সাবেক প্রভাবশালী মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের কিছু অডিও ফাঁস হয়, যেখানে জাহাঙ্গীরকে আওয়ামী নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরি করার নির্দেশ দিতে দেখা যায়।

মোজাম্মেল হকের বাড়িতে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার নেপথ্যে যে কজন জড়িত ছিলেন, তারমধ্যে জাহাঙ্গীর আলমের ঘনিষ্ঠ ছাত্রলীগ নেতা এ এন এম নকিব আশরাফ চৌধুরী ছিলেন অন্যতম।

হামলার সময় নকিব তার ফেসবুক ওয়ালে ছাত্র-জনতাকে গনধোলাই দেয়ার আহ্বান জানান এবং বাংলাদেশে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে বলে উল্লেখ করে নিজেকে আওয়ামী পক্ষের একজন যোদ্ধা হিসেবে আক্রমণকারীর ভূমিকায় তুলে ধরেন।

 

এ ছাড়া গত বছরের ১৬ জুলাই ফ্যাসিস্ট হাসিনার রিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় নকিব সরাসরি অংশগ্রহণ করে।

ওই সময় আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নকিব নারী শিক্ষার্থীদের বিশেষভাবে টার্গেট করে হামলা চালায়।

শুধু হামলা করেই এই নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা ওইদিন ক্ষান্ত হয়নি, বরং মারধরের পর রাত ১১টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাষ্কর্যের সামনে দাঁড়িয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও এক নারী শিক্ষার্থীকে নিজ হাতে নাক ফাটিয়ে দেয়া নিয়ে হাসি-তামাশা করে।

নকিব ১৬ জুলাই রাতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ব্রাশ ফায়ার করারও হুমকি দেয়, যা ওই সময়কার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাথে জড়িত কয়েকটি গ্রুপে ভাইরাল হয়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ধারাবাহিক হামলার একপর্যায়ে নকিব সাধারণ ছাত্রদের হাতে গণপিটুনীর শিকার হয় ও পুলিশের হাতে আটক হয়।

এর প্রেক্ষিতে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নকিবকে সম্মিলিতভাবে বয়কট করে।

৫ আগস্ট সরকার পতনের পর নকিবের সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগে নর্থ সাউথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হলে সে তার জবাবে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহীতামূলক কর্মকান্ড’ হিসেবে উল্লেখ করে।

এ ছাড়া নকিব তার কারণ দর্শানোর জবাবে ধানমন্ডি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার কথা স্বীকার করে এবং এজন্য গর্বিত বলে জানায়।

তার এই সন্ত্রাসী কাজে সমর্থন ও অংশগ্রহণের স্বীকারোক্তিমূলক জবাবের পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নকিবকে স্থায়ী বহিষ্কার দেয়।

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে নারী বান্ধবী নিয়ে অশ্লীলতায় মেতে ওঠার প্রমাণ রয়েছে।   

banner close
banner close