শুক্রবার

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
৮ ফাল্গুন, ১৪৩১
২২ শা’বান, ১৪৪৬

কুয়েট শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের হামলার প্রতিবাদে জাবিতে বিক্ষোভ

প্রতিনিধি,জাবি

প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ২১:৪৬

আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ২১:৪৭

শেয়ার

কুয়েট শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের হামলার প্রতিবাদে জাবিতে বিক্ষোভ
ছবি: বাংলা এডিশন

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের হামলার ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। 

মঙ্গলবার  সন্ধ্যা সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সড়ক ঘুরে একই স্থান গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ করেন তারা। মিছিলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন, বিপ্লবী সাংস্কৃতিক মঞ্চ ও আধিপত্যবাদ বিরোধী মঞ্চের জাবি শাখার নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।

বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা “ ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল, সন্ত্রাস করে দুই দল”, “ লীগ গেছে যেই পথে, দলও যাবে সেই পথে”, সন্ত্রাসীদের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও”, “ ছাত্রদল সন্ত্রাসী করে, ইন্টেরিম কি করে” ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। 

সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী শোয়াইব হাসান। সমাবেশে কুয়েটে ছাত্রদলের হামলার নিন্দা জানিয়ে নাদিয়া রহমান অন্বেষা বলেন, কুয়েটে আজ একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। আজ থেকে ছয়মাস আগেও আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে দেখেছি, আজ কুয়েটে সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে। একইকায়দায় ছাত্রদল আমাদের ভাইবোনেদের ওপর যে নারকীয় হামলা চালিয়েছে সেটার নিন্দা জানাই। নতুন বাংলাদেশে আমরা যে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তোর দিকে যাচ্ছি বা আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি সেই স্বপ্নকে ব্যহত করার চেষ্টা হচ্ছে। ছাত্রলীগের মতো সন্ত্রাসী কার্যক্রম ক্যাম্পাসগুলোতে যেই গোষ্ঠীই পরিচালনা করতে চাইবে তাদেরকে আমরা শক্তহাতে প্রতিহত করব। 

গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহবায়ক আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, অভ্যুত্থানের মাত্র সাত মাসের মাথায় একটি ক্ষমতালোভী দল ক্যম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করে পেশিশক্তির রাজনীতি চর্চা করার জন্য কুয়েট ক্যাম্পাসে তাদের ক্ষমতার প্রথম ধাপ আজকে মানুষের সামনে উপস্থাপন করেছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, সাত মাস আগের ইতিহাস কিন্তু খুব বেশিদিন আগের ইতিহাস নয়। আপনারা যদি আপনাদের এমন ঘৃণিত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আপনারা চালু রাখেন তাহলে লীগের মতো ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করতে আমরা কিন্তু বিন্দুমাত্র সময় নিবো না। 

এসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার সদস্য সচিব তৌহিদ সিয়াম বলেন, আমরা জুলাই পার করেছি এখনও এক বছরও হয়নি। কিন্তু একটি দল ক্ষমতায় যাওয়ার আগে যে ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চর্চা করা শুরু করেছে তা থেকে আমরা আভাস পাই তারা যদি ক্ষমতায় যায় তারা কতটা ভয়ানক হয়ে উঠতে পারে। দুই হাজার নিহত, আহত ও পঙ্গুত্ব বরণকারী শিক্ষার্থীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা যে বাংলাদেশ পেয়েছি, সেই বাংলাদেশে কেউ এসে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করবে সেটা জন্য দেখার জন্য শিকার্থীরা আত্মত্যাগ করেনি। স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে আমরা মাত্র ছত্রিশ দিনে বিদায় করেছি। বিএনপি নামক এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে বিদায় করতে ছাত্রসমাজ ছত্রিশ দিনও সময় নেবে না। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বিএনপি ও ছাত্রদলেরও ভূমিকা রয়েছে। তাদেরকে মনে করিয়ে দিতে চাই, আপনারা জুলাইয়ের যে মিছিলে একত্রিত হয়ে লীগের বিরুদ্ধে লড়ছেন সেটা ভুলে যাবেন না।

ছাত্রসমাজ যদি একত্রিত হয়ে যায় তাহলে আপনাদেরও কি অবস্থা হবে সেটাও ভুলে যাবেন না। জুলাই-আগস্ট কে ভুলে গিয়ে ছাত্রসমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবেন না। গণমানুষের পথে থাকেন, ছাত্রসমাজের পথে থাকেন, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তার পথে থাকেন। নতুন বাংলাদেশ গড়ার মিছিলেও আপনারা শামিল হন। অন্যথায় আমরা আপনাদেরকে চব্বিশের রাজাকার বলে চিহ্নিত করব। আপনারা যদি চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব করে জুলাইয়ের চেতনাকে ব্যহত করেন তাহলে ইতিহাসে জুলাইয়ের রাজাকার হিসেবে আপনাদের নাম লেখা থাকবে। আপনারা ফ্যাসিবাবিরোধী মিছিলের বিরুদ্ধে  যান তাহলে আমরা জুলাইয়ে আপনাদের অবদানের কথা ভুলে গিয়ে লীগ গেছে যে পথে আপনাদেরকেও সেই পথে পাঠিয়ে দেব।