শনিবার

১ মার্চ, ২০২৫
১৬ ফাল্গুন, ১৪৩১
২ শা’বান, ১৪৪৬

ছাত্রদের নেতৃত্বে গঠিত দলের শীর্ষ  ৯ পদের ৮ জনই কেন ঢাবির; প্রশ্ন অনেকের

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ২১:৪৫

শেয়ার

ছাত্রদের নেতৃত্বে গঠিত দলের শীর্ষ  ৯ পদের ৮ জনই কেন ঢাবির; প্রশ্ন অনেকের
ছবি:সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করলো নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। নতুন দলের আহ্বায়ক হয়েছেন নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব করা হয়েছে আখতার হোসেনকে।

শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন এ দলের নাম ঘোষণা করা হয়। 

শহীদ মো. ইসমাইল হাসান রাব্বির বোন মিম আক্তার দলটির নাম ঘোষণা করেন।

পরে আংশিক কমিটির অন্যান্য সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন আখতার হোসেন। দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক পদে সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদীব, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব পদে ডা. তাসনিম জারা ও নাহিদা সরোয়ার নিভা, প্রধান সমন্বয়কারী পদে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম সমন্বয়ক পদে আব্দুল হান্নান মাসউদ, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) পদে হাসনাত আবদুল্লাহ ও মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) পদে সারজিস আলমের নাম ঘোষণা করেন তিনি।

শুক্রবার বিকাল ৩টায় জাতীয় সংসদের সামনে থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে তারুণ্যনির্ভর রাজনৈতিক দলটি। জানা গেছে, দলের শীর্ষ নয়টি পদের মধ্যে আটটি পদের সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এবং বর্তমান শিক্ষার্থী।

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক হচ্ছেন নাহিদ ইসলাম। নাহিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক ছাত্র। সদস্য সচিব আখতার হোসেন ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক।

জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী। প্রধান সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগ থেকে পড়াশোনা সম্পন্ন করেছেন। যুগ্ম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউটের অধীনে ইংরেজি ভাষা শিক্ষা বিভাগে পড়ছেন। মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী এবং মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম প্রাণিবিদ্যা বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। দপ্তর সম্পাদক সালেহ উদ্দিন সিফাত ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের ছাত্র।

অনেকে বলছেন, শেখ হাসিনা সরকার পতন আন্দোলনে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, তা নয়। দেশের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ছিল গুরুত্বপূর্ণ অবদান। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা যেমন ভূমিকা রেখেছেন, তেমনই অগ্রণী ভূমিকা ছিল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের।

শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলে তিনজন শিক্ষার্থীকে উপদেষ্টা করা হয়। ওই তিনজন উপদেষ্টাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। তখন অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে উপদেষ্টা না করায় সমালোচিত হয়েছিল। এবার ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া সমন্বয়ক ও শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে গঠিত রাজনৈতিক দলেও শীর্ষ পদে ঢাবি শিক্ষার্থীদের আধিক্য। কেউ কেউ বলছেন,এই ভাবে দল গঠন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে গঠিত রাজনৈতিক দলটিতেও বৈষম্য তৈরী করা হলো।