চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনোতিতে ১৯ দিনব্যাপী ৫৪তম সীরাতুন্নবী (স.) মাহফিল বৃহস্পতিবার দিবাগত ভোররাতে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হহে যাচ্ছে।
সমাপনী দিবসে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত প্রখ্যাত ওলামায়ে কেরামগণ মাহফিলে অংশগ্রহণ করে বক্তব্য রাখবেন। চুনোতি সীরাত ময়দানে সমাপনী দিনের মাহফিল সকাল ৯টায় শুরু হয়। মোতোয়াল্লী কমিটির সভাপতি শাহজাদা মাওলানা হাফিজুল ইসলাম মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ সকল আশেকে রাসুলকে মাহফিলে উপস্থিত থাকার আন্তরিক দাওয়াত জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালের ১১ রবিউল আউয়াল চুনোতির মহান আধ্যাত্মিক সাধক হযরত আলহাজ্ব শাহ মাওলানা হাফেজ আহমদ প্রকাশ (শাহ সাহেব কেবলা) (রহ.) ঐতিহাসিক ‘চুনোতী সীরাত মাহফিল’ প্রবর্তন করেন। প্রতি বছর ১১ রবিউল আউয়াল বাদে যোহর শুরু হয়ে ২৯শে রবিউল আউয়াল ফজর আজানের পূর্বে লক্ষ লক্ষ মানুষের আমিন-আমিন ধ্বনিতে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে এই মাহফিল সম্পন্ন হয়।
মাহফিলের নামকরণ: ১৯৭৩ সালে মাহফিল শুরুর আগে শাহ সাহেব কেবলা নামকরণের জন্য স্বনামধন্য আলেম ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে পরামর্শ সভার আয়োজন করেন। সেই সভায় ‘চুনোতী সীরাত মাহফিল’ নামটি নির্ধারণ করা হয়।
১ দিন থেকে ১৯ দিনের মাহফিল: ১৯৭২ সালে চুনোতি শাহ মঞ্জিল চত্বরে ১ দিনব্যাপী সীরাত মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৭৩ সালে ৩ দিন, ১৯৭৪ সালে ৫ দিন, ১৯৭৬ সালে ১০ দিন, ১৯৭৭ সালে ১২ দিন, ১৯৭৯ সালে ১৫ দিন এবং একই বছর ২ দিন বাড়িয়ে ১৭ দিন, পরবর্তীতে আরও ২ দিন বাড়িয়ে ১৯ দিনব্যাপী সীরাতুন্নবী মাহফিল করা হয়। ১৯৮০ সাল থেকে ১৯ দিনব্যাপী সীরাতুন্নবী (সা.) মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
এলাকাবাসীর প্রাণ: সীরাত মাহফিলকে কেন্দ্র করে পুরো চুনোতি এলাকায় যেন ঈদের আনন্দ বিরাজ করে। প্রতিটি বাড়ি মেহমানে ভরপুর থাকে। এলাকাবাসীর পাশাপাশি চুনোতি হাকিমিয়া কামিল মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকবৃন্দ মাহফিল আয়োজনে সহযোগিতা করেন।
খাবারের আয়োজন: মাহফিলে প্রতিদিন আড়াই হাজার নারী-পুরুষ ও শিশুকে খাবার পরিবেশন করা হয়। আশেকে রাসুল খ্যাত হযরত শাহ মাওলানা হাফেজ আহমদ (র.) প্রকাশ শাহ সাহেব কেবলা কর্তৃক প্রবর্তিত ১৯ দিনব্যাপী সীরাতুন্নবী (স.) মাহফিল নবীপ্রেমিক মুসলমানদের মিলনস্থল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সুনাম: এই মাহফিলের সুনাম আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের বৃহৎ মিলনমেলা হিসেবে পরিচিত। আখেরি মোনাজাতে সারাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে লাখ লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: