
আল্লাহর রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ইসলামের স্তম্ভ হচ্ছে পাঁচটি। যথা- আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোনো উপাস্য নেই এবং নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসুল-এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করা, সালাত আদায় করা, যাকাত আদায় করা, হজব্রত সম্পাদন করা এবং রমজানের সিয়ামব্রত পালন করা (রোজা রাখা)।
পবিত্র মাহে রমজান মাস ইবাদতের মাস। এ মাসে কোনো ইবাদত করলে তার ৭০ গুণ সওয়াব পাওয়া যায়। রমজান মাস এলেই ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা নিজের কর্মব্যস্ততা কমিয়ে দিয়ে বেশি বেশি ইবাদত করার চেষ্টা করেন। আর সেহরি হলো রোজার অন্যতম অনুষঙ্গ। সেহরিতে রয়েছে বরকত এবং সেহরি খাওয়া সুন্নত। এখন কথা হলো- কেউ যদি সেহরি না খেয়ে রোজা রাখে, তাহলে কী তার রোজা আদায় হবে?
দিনভর রোজা রাখার শক্তি জোগায় সেহরি। কারণ, সিয়াম সাধনার মাসে সেহরিতে মহান আল্লাহ তা’আলা অশেষ বরকত রেখেছেন। এ বিষয়ে হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, তোমরা সেহরি খাও, সেহরিতে বরকত রয়েছে। (সহিহ মুসলিম: হাদিস: ২৪২০; সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৮০১)
অন্য এক হাদিসে এসেছে, আমর ইবনু আস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, আমাদের ও কিতাবিদের সিয়ামের মধ্যে পার্থক্য হলো সেহরি খাওয়া (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৪২১)। হাদিসে পবিত্র রমজানে দিনভর সিয়াম পালনের জন্য যেমন ভোররাতে সেহরির শেষ সময়ের ব্যাপারে বলা হয়েছে, তেমনি দ্রুত ইফতার সেরে নেওয়ার কল্যাণের কথাও এসেছে।
সামুরা ইবনু জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি রাসুল (সা.) এর কাছে শুনেছি, তিনি বলেছেন, বিলালের আহ্বান (আজান) যেন তোমাদের সেহরি খাওয়া থেকে ধোঁকায় না ফেলে এবং এ শুভ্র রেখাও (ভোরের), যতক্ষণ পর্যন্ত না তা বিস্তৃত হয় (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৪১৫)।
এ ছাড়া সাহল ইবনু সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যতদিন মানুষ বিলম্ব না করে ইফতার করবে, ততদিন তারা কল্যাণের উপর থাকবে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৪২৫)
তবে কেউ যদি গভীর ঘুমের কারণে ভোররাতে উঠতে না পারে বা একেবারে সেহরির শেষ সময়ে উঠে সে ক্ষেত্রে আলেমদের ভাষ্য, সেহরি খাওয়া রোজার জন্য শর্ত নয়। তাই সেহরি না খেলেও রোজা আদায় হয়ে যাবে। তবে মনে রাখতে হবে সেহরি খাওয়া সুন্নত। এ ক্ষেত্রে সেহরিতে অল্প খেলেও সুন্নত পালন হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: