![৭ লাখ রোবট ব্যবহার করছে অ্যামাজন ৭ লাখ রোবট ব্যবহার করছে অ্যামাজন](./assets/news_images/2025/02/13/131.jpg)
ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন সাম্প্রতিক সময়ে নিজেদের রোবটিক্স কার্যক্রমকে আরও ত্বরান্বিত করেছে। বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠানটির ফুলফিলমেন্ট সেন্টারগুলোতে বর্তমানে সাড়ে ৭ লাখেরও বেশি রোবট মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন কাজে নিযুক্ত আছে। মানুষের পাশাপাশি এত বিপুল সংখ্যক রোবট ব্যবহারের কথা খুব একটা শোনা যায় না। তবে সম্প্রতি প্রকাশিত বিজনেস ইনসাইডারের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, অ্যামাজন নিজেদের বিভিন্ন কাজে রোবটের ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, অ্যামাজন কেন এই বিশাল পরিমাণ রোবটবাহিনী দিয়ে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে? বিজনেস ইনসাইডারের প্রতিবেদন বলছে, অ্যামাজনের রোবটিক্স কার্যক্রম সম্প্রসারণের পেছনে মূল কারণ হচ্ছে, খরচ কমানোর পাশাপাশি আরও দ্রুততার সাথে পণ্য ডেলিভারি করা। রোবট ব্যবহারের কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে অ্যামাজন প্রতি বছর ১০ বিলিয়ন ডলার করে অর্থ সাশ্রয় করতে সক্ষম হবে বলে জানিয়েছে আমেরিকার বিনিয়োগ ব্যাংক ও আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান মর্গ্যান স্ট্যানলি।
তবে রোবটিক্স কার্যক্রম জোরদার করার ফলে অ্যামাজন কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হেঁটেছে ভেবে থাকলে আপনি ভুল ভেবেছেন। অ্যামাজন জানিয়েছে, রোবটিক্স কার্যক্রম সম্প্রসারণের ফলে এআই ও মেশিন লার্নিংখাতে তাঁরা নতুন অনেক কর্মীকে নিয়োগ দিয়েছে। ফলে আগের চেয়েও বেশি চাকরি তৈরি করেছে অ্যামাজন।
নিজেদের রোবটিক্স সক্ষমতা বাড়াতে অ্যামাজন অপেক্ষাকৃত ছোট স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিনিয়োগ করেছে। এই যেমন কোভ্যারিয়েন্ট নামক স্টার্টআপের তিন প্রতিষ্ঠাতাকে অ্যামাজন তাঁদের বোর্ডে জায়গা করে দিয়েছে এবং কোভ্যারিয়েন্ট-এর বেশ কয়েকটি ফাউন্ডেশন মডেলের লাইসেন্স করিয়ে নিয়েছে। উপরন্তু, ২০২২ সালে ‘অ্যামাজন ইনডাস্ট্রিয়াল ইনোভেশন ফান্ড’ গঠন করে তাঁরা। এই ফান্ড থেকে উদীয়মান ও ভবিষ্যৎমুখী প্রযুক্তির সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করা হয়। এর ফলে এজিলিটি রোবটিক্স-এর মতো প্রতিষ্ঠানের সাথে অংশিদারিত্বের সম্পর্ক তৈরি হয়েছে অ্যামাজনের। উল্লেখ্য, এজিলিটি’র তৈরি দুই পায়ের রোবট ‘ডিজিট’ এখন অ্যামাজনের ফুলফিলমেন্ট সেন্টারে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
অ্যামাজনের সবচেয়ে উন্নতমানের রোবটগুলোর একটি হচ্ছে ‘স্প্যারো’। এটি মূলত একটি রোবটিক আর্ম (হাত), যেটা ২০২৩ সালে টেক্সাসের ফুলফিলমেন্ট সেন্টারে প্রথম নিয়ে আসে অ্যামাজন। এআই ও কমপিউটার ভিশন ব্যবহার করে স্প্যারো নিজেই কনটেইনার থেকে একটি করে আইটেম তুলে নিতে পারে। এক্ষেত্রে সুবিধা হচ্ছে এই রোবটটি দু’শরও বেশি পণ্য আলাদা আলাদা করে চিহ্নিত করতে পারে। ফলে পণ্য বাছাই ও মজুদ প্রক্রিয়াটি আরো কার্যকরভাবে সম্পাদন করতে পারে এটি।
এছাড়া হারকিউলিস ও টাইটানের মতো অ্যামাজনের রোবটগুলো একাধিক আইটেমের ভারি পডগুলো তুলতে পারে। ২০১৭ সালের রোবট হারকিউলিস ১২৫০ পাউন্ড পর্যন্ত ওজনের পড উত্তোলন করতে সক্ষম। অন্যদিকে ২০১৭ সালেরই রোবট টাইটান দ্বিগুণ ওজনের পড তুলতে পারে। পেগাসাস ও জ্যানথাস রোবট দুটি প্যাকেজ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশেষ করে জ্যানথাস রোবটটি বিভিন্ন প্রকার কার্য সম্পাদনে পারদর্শী এবং এর খরচও তুলনামূলকভাবে কম।
আরও পড়ুন: