
আমাদের মধ্যে অনেকেরই রাতভর মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটি করার অভ্যাস আছে। আর আধুনিকতার এই যুগে প্রায় সবার ঘরেই উচ্চ গতির ইন্টারনেট ওয়াই-ফাই আছে। আর তারা সেই ওয়াই-ফাই চালু করে রাখেন সব সময়।
আবার ফোন না দেখলেও ওয়াই-ফাই চালু থাকা অবস্থাতেই ফোনটি মাথার কাছে নিয়েই ঘুমিয়ে পড়েন অনেকে।
ওয়াই-ফাই রাউটার সবসময়েই চালু থাকে। এর প্রভাব শরীরে কিভাবে পড়তে পারে, তা নিয়ে নানা মত রয়েছে। একটা সময়ে বলা হতো, ওয়াই-ফাই থেকেও ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে। কিন্তু আদৌ কি তা সম্ভব? কী বলছে সাম্প্রতিক গবেষণা? চলুন, জেনে নেওয়া যাক।
২০১১ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দাবি করেছিল, ওয়াই-ফাই থেকে যে তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ বের হয়, তা মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। ওই তরঙ্গ দেহকোষে ঢুকলে তা থেকে কোষের অনিয়মিত বিভাজন শুরু হতে পারে। যা পরে ক্যান্সার কোষের জন্ম দিতে পারে। ক্রমাগত ওই তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গের মধ্যে থাকলে নানাভাবে শরীরের ক্ষতি হতে পারে বলেও সতর্ক করেছিল হু।
কিন্তু বর্তমান সময়ের গবেষণা বলছে, ওয়াই-ফাই থেকে যে চুম্বকীয় তরঙ্গ তৈরি হয় তা শরীরের ক্ষতি করে না। ওই বিকিরণ রেডিও-টিভির মতোই ‘নন-আয়োনাইজড’। অর্থাৎ সেই বিকিরণ কোষের ক্ষতি করবে না অথবা ডিএনএ-র ওপর ক্ষতিকর প্রভাবও ফেলবে না।
ব্রিটেনের ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টারও একই কথা জানিয়েছে। ওয়াই-ফাই থেকে ক্যান্সার হওয়ার কোনো রকম ঝুঁকিই নেই।
তবে ভারতের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের গবেষণা বলছে, ওয়াই-ফাই রাউটার থেকে যে ‘ইলেকট্রোম্যাগনেটিক’ তরঙ্গ বের হয়, তা মানুষের মস্তিষ্কের জন্য বিপজ্জনক। এমন অনেক মানুষজনকে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, যারা ওয়াই-ফাই চালু রেখে মাথার কাছে ফোন নিয়ে ঘুমান, তাদের অনিদ্রা, মাথা যন্ত্রণা বা মাইগ্রেনের সমস্যা দেখা দিয়েছে। এমনকি রক্তচাপেও হেরফের দেখা গেছে।
গবেষকদের পরামর্শ, ঘুমানোর সময়ে ওয়াই-ফাই রাউটার বন্ধ করে দিন। যখন ব্যবহার করছেন না, তখন ব্লুটুথ স্পিকার বা রাউটার বন্ধ রাখুন। আর অবশ্যই ফোনটি মাথার কাছে নিয়ে ঘুমাবেন না, রাউটারও যেন মাথার কাছাকাছি না থাকে।
আরও পড়ুন: