৩০ অক্টোবর। ১৯৬০ সালের এদিনেই আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেস প্রদেশের লানুস শহরে জন্মেছিলেন ফুটবল জগতের অন্যতম নক্ষত্র ডিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনা। তাঁর পায়ের জাদুতেই বিশ্ব আঁচ পেয়েছিল অন্য মাত্রার এক ফুটবলের। এই জাদুকরের জাদুতেই আর্জেন্টিনা জিতেছিল ১৯৮৬ আসরের বিশ্বকাপ। মৃত্যুর পর এটি তাঁর তৃতীয় জন্মদিন।
ফুটবলের সঙ্গে তাঁর বোঝাপড়া ছেলেবেলা থেকেই। বয়স ১৭-তে না পড়তেই আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্সের হয়ে তাঁর আগমন ঘটে পেশাদার ফুটবলে। বর্তমানে তাদের হোম গ্রাউন্ডের নামকরণ হয়েছে ম্যারাডোনার নামেই। সেদিন আর্জেন্টাইন প্রিমেরা ডিভিশনের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড়ের রেকর্ডটি নিজের করে তৎকালের তরুণ সেই ডিয়েগো। আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্সে পাঁচ মৌসুমে ১৬৭ ম্যাচে ১১৫ গোল করেন ম্যারাডোনা।
১৯৮২ বিশ্বকাপের পর শুরু হয় ম্যারাডোনার বার্সা অধ্যায়। তৎকালীন বিশ্বরেকর্ড ৭.৬ মিলিয়ন ডলার ট্রান্সফার ফি-তে কাতালান ক্লাবটিতে যোগ দিয়ে কোচ সিজার লুইস মেনোত্তির অধীনে কোপা ডেল রে ও স্প্যানিশ সুপার কাপ জেতেন ম্যারাডোনা।
দুই দশক ধরে মাতিয়েছেন ছয়টি ক্লাব। তবে নিজ দেশের বাইরে ইতালির নেপলসকে নিয়ে গেছেন অন্য এক উচ্চতায়। শহরটি ক্লাব নাপোলির কাছে এখনো যিনি ঈশ্বর সমান। সেখানে দীর্ঘ আট বছরের ক্যারিয়ারে পার করেছেন নিজের সোনালি সময়। ক্লাব ফুটবলে পা রাখার বছরেই পান জাতীয় দলে ডাক।
সামনেই ১৯৭৮ সালের বিশ্বকাপ। তবে বয়স বিচারে খেলার সুযোগ হয়নি সেই আসরে। তবে পরের আসরেই হয়ে উঠে অটো চয়েসে। সেই আসরটা যদিও রাঙাতে পারেননি তিনি। তবে ভক্তরা এখনও হৃদয়ে লালন করে ১৯৮৬ সালের আসর। সেবার যেন একাই দলকে এনে দেন শিরোপা। জাদুকর, কিংবদন্তি, আধুনিক ফুটবলের অন্যতম বাহক, এসব বিশেষণের অর্জন যে সে আসরেই।
১৯৯০ আসরেও দলকে নিয়ে গিয়েছিলেন ফাইনালে। তবে পশ্চিম জার্মানির সঙ্গে সেই ম্যাচে দেখেছিলেন লাল কার্ড। ছোঁয়া হলো না নিজের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ শিরোপা। এরপর থেকেই যেন দূরে সরে যেতে থাকলেন ফুটবল থেকে। ক্যারিয়ারে মোট গোল করেছেন ৩৪৬টি। তবে ফিরলেন আবার ২০০৮ সালে। কোচ হয়ে। তাও আবার মেসিদের জাতীয় দলের হয়েই।
নানা জটিল সমীকরণ পেরিয়ে দলকে নিয়ে যান ২০১০ আসরের মূলপর্বে। কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির কাছে তাঁর দল হজম করে ৪ গোল। পড়ে বোর্ডের সঙ্গে রেষারেষিতে ইস্তফা দেন তাঁর দায়িত্ব থেকে।
২০২২ আসরে সেই মেসির হাতেই উঠল বিশ্বকাপ। বেঁচে থাকলে হয়তো আনন্দে উল্লাসে মাতাতেন ফুটবল পাড়া। ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বরে মারা যান তিনি। তবে ফুটবলপ্রেমীদের কাছে আমৃত্যু এই কিংবদন্তির আজ ৬৩তম জন্মদিন।
আরও পড়ুন: