
হিন্দি ভাষার প্রতি বিদ্বেষ আজকের নয় ভারতের তামিলদের৷ রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ায় সাতের দশকে তামিলনাড়ুতে যে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম হয়েছিল, তার রেশ এখনও রয়েছে৷ সেই ইতিহাস আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। সম্প্রতি হিন্দি বিদ্বেষ উসকে দিয়ে শিরোনামে সদ্য আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া রবিচন্দ্রন অশ্বিন৷
বৃহস্পতিবার চেন্নাইয়ে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে তারকা ক্রিকেটার জানিয়ে দিলেন, হিন্দি হতে পারে সরকারি ভাষা; কিন্তু কোনওভাবেই রাষ্ট্রীয় ভাষা নয়। ভারতের তারকা ক্রিকেটের এমন মন্তব্যের পর স্বাভাবিকভাবেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য অনুসারে, চেন্নাইয়ের এক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে বক্তব্য রাখতে উঠে অশ্বিন ছাত্রদের কাছে জানতে চান, কতজন তামিল, ইংরেজি কিংবা হিন্দি জানেন৷ তিনি জিজ্ঞেস করেন, “এখানে ইংরেজি কত জন বোঝে?” কলেজের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বেশির ভাগ চিৎকার করে জানান যে তাঁরা ইংরেজি বোঝেন। এর পর তিনি তামিল নিয়ে প্রশ্ন করেন। সেখানেও ভালই সাড়া পাওয়া যায়। সব শেষে অশ্বিন বলেন, “হিন্দি কত জন বোঝে?” এ বারে কলেজের ছাত্রছাত্রীদের চিৎকারের আওয়াজটা অনেকটাই কম হয়। তার পরেই অশ্বিন বলেন, “আমি এটাই বোঝাতে চাইছি৷ হিন্দি সরকারি ভাষা, কোনওভাবেই আমাদের রাষ্ট্রীয় ভাষা নয়।”
২০১১ সালের আদমশুমারির তথ্য অনুযায়ী, বহু ভাষাভাষীদের দেশ ভারতের ৪৩.৬৩ শতাংশ মানুষের মাতৃভাষা হিন্দি। তবে তামিলনাড়ুসহ বিভিন্ন রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলোর পুরনো অভিযোগ হলো, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার জোর করে হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দিতে চায়। ২০১৯ সালে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ‘এক দেশ, এক ভাষা’র কথা বলায় তীব্র প্রতিবাদ হয়েছিল। এবার তাতে ঘি ঢাললেন অশ্বিন।
দক্ষিণ ভারতের রাজনৈতিক দলগুলির দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দিতে চাইছে। এই পরিস্থিতিতে অশ্বিনও প্রকাশ্যে হিন্দির বিরোধিতায় সুর চড়ালেন। যা দেখে অনেকেই মনে করছেন, ক্রিকেট থেকে পাকাপাকিভাবে অবসর নেওয়ার পর রাজনীতির ময়দানে দেখা যেতে পারে অশ্বিনকে। এই কারণেই তিনি হয়তো এখন থেকে পিচ তৈরি করে রাখছেন। হিন্দি-বিরোধিতার মাধ্যমেই রাজনীতি শুরু করতে পারেন এই ক্রিকেটার।
আরও পড়ুন: