
ছেলে বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করবেন এমনটাই স্বাভাবিক। রোনালদিনিওর ছেলে জোয়াও মেন্দেস সেই পথেই এগোচ্ছিলেন। কিন্তু দ্রুতই তাঁর মনে হলো ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তাই বার্সেলোনার লা মাসিয়া একাডেমি ছেড়ে দুই বছরের চুক্তিতে পাড়ি জমিয়েছেন ইংলিশ ক্লাব বার্নলিতে। তবে বার্সার মতো বার্নলিতেও এখন পর্যন্ত মূল দলে খেলার সুযোগ পাননি জোয়াও। যদিও বার্সা ছাড়ার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল বলেই মনে করেন তিনি।
ব্রাজিলের হয়ে একটি বিশ্বকাপ জেতা রোনালদিনিও নিজেকে নিয়ে গেছেন কিংবদন্তিদের কাতারে। ১৮ বছরের ক্যারিয়ারে ৮টি ক্লাবে খেলা এই ফুটবলার তাঁর সোনালী সময় কাটিয়েছেন বার্সায়। ২০০৩ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত পাঁচ বছর কাতালানদের জার্সিতে মাঠ মাতান তিনি। জিতেছেন দুটি লা লিগা, দুটি সুপার কাপ ও একটি চ্যাম্পিয়নস লিগ। বার্সায় থাকাকালীনই তাঁর হাতে উঠেছে ক্যারিয়ারের একমাত্র ব্যালন ডি’অর। তা সত্ত্বেও ছেলের মন বসেনি এই ক্লাবে।
১৯ বছর বয়সী জোয়াও বলেন, ‘অন্য কিছু নয়, আমি জোয়াওই হতে চেয়েছি। আমি কখনো বাবার মতো হতে চাইনি এবং হওয়ার চেষ্টাও করিনি। তাই তিনি যেখানে (বার্সা) খেলেছেন সেখান থেকে দূরে থাকতে চাই। আমি মনে করি, বার্নলিতে আসাটা ছিল আমার জন্য ভালো পদক্ষেপ। আমি যেটা হতে চাইনা, সেটা আমার পছন্দ হোক বা না হোক, বাইরের লোকেরা চায় আমি সেটাই হই। বার্নলিতে এসে ভালোই হয়েছে। যদিও শুরুটা কঠিনই ছিল, সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। এমনকি এখনও কঠিন, যেহেতু উত্তরে তাই শীতের সময় এখানকার আবহাওয়া একটু বেশিই খারাপ। যদি গ্লাভ এবং দুটো মোজা পরি, তাহলে আমরা মানিয়ে নিতে পারি।’
রোনালদিনিও কখোনই ছেলেকে ফুটবলার বানাতে চাননি। কারণ অবধারিতভাবেই প্রচুর চাপ সহ্য করতে হবে তাঁকে। কিন্তু রক্তের টান কি এতো সহজেই আলাদা হয়? জোয়াও সেই আবেগকে সঙ্গী করেই হেঁটেছেন ফুটবলের পথে। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা-মা একদমই চাননি, আমি ফুটবলার হই, কারণ তাঁরা জানতেন আমার সঙ্গে কী ঘটবে। কিন্তু যখন আবেগ কথা বলে, তখন আর কিছুই করার থাকে না। এই রেখাটা অনেকে পেরোতে পারে, আবার অনেকে পারে না। কিন্তু আমি সবসময় গর্বিত অনুভব করি যে, আমি তাঁর (রোনালদিনিও) সন্তান।’
জোয়াও তাঁর খেলাটা খেলতে চান নিজের মতো করেই। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা সেরা না হলেও, খেলাটির সেরাদের মধ্যে অন্যতম। তাই তাঁর ছেলে হিসেবে তাঁকে নিয়ে কথা বলাটাও আমার জন্য গর্বের। আমি চেষ্টা করি নিজের কাজটি করার। এসবের মধ্যে চেষ্টা করি বাবাকে না জড়ানোর। চাপহীন থেকে নিজের মতো করে নিজের ফুটবলটা খেলার চেষ্টা করি আমি।’
আরও পড়ুন: