
আজকের দিনটা বাংলাদেশ ফুটবলের জন্য ঐতিহাসিকই বটে! সম্ভবত বিশ্ব ফুটবলেরই। কেননা আলোকস্বল্পতার কারণে কোনো ফুটবল ম্যাচ স্থগিত হয়েছে, এমনটা খুব একটা শোনা যায় না। সাম্প্রতিক সময়ে তো কখনোই নয়। অবশ্য গ্রামীণ ফুটবলে এমনটা দেখা যায়।
আজ সেই ঘটনাটিই ঘটল ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে। সেটিও আবার শীর্ষ পর্যায়ের কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে। ২০১৮ সালের পর আজ আবারও ফেডারেশন কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছে বসুন্ধরা কিংস-আবাহনী লিমিটেড। কিন্তু ফল আসার আগেই ফাইনাল স্থগিত করতে বাধ্য হন রেফারি।
আলোকস্বল্পতার কারণে ১০৫ মিনিট শেষে উভয় পক্ষের অধিনায়কদের সঙ্গে কথা বলে রেফারি জানান, ম্যাচ আর হবে না। বাকি সময়ের খেলা হবে নাকি আবার হবে তা পরে জানিয়ে দেবে বাফুফের লিগ কর্তৃপক্ষ। এতে করে ১-১ গোলে ড্রয়ে আজকের মতো মাঠ ছাড়তে হয় বসুন্ধরা-আবহনী খেলোয়াড়দের।
ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটেই এগিয়ে যায় বসুন্ধরা কিংস।
শুরুতেই কিংসকে আনন্দে ভাসার উপলক্ষ্যটা এনে দেন হুয়ান লেসকানো। সাদ উদ্দিনের ফ্রি কিক থেকে হেডে গোল করেন আর্জেন্টিনার ফরোয়ার্ড। বসুন্ধরার জার্সিতে তার প্রথম গোল। লিডটা অবশ্য বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি ফেডারেশন কাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
১৫ মিনিট পরেই যে আবাহনীকে সমতায় ফেরান মোহাম্মদ ইব্রাহিম।
এমেকা ওগবাগের পাসে দলকে সমতায় ফিরিয়ে অবশ্য গোল উদযাপন করেনি তিনি। বসুন্ধরা কিংস সাবেক ক্লাব বলে কথা!
পরে আর কোনো গোল না হলেও বিরতিতে যায় দুই দল। বিরতির পর খেলা শুরু হতেই কালবৈশাখীর ঝড় শুরু হয়। এতে প্রায় এক ঘণ্টা খেলা বন্ধ থাকে। আবার খেলা শুরু হওয়ার পরেই গোলের দারুণ সুযোগ পান রাকিব। বাঁ প্রান্ত থেকে সোহেল রানার ক্রসে মাথাটা লাগালেন বটে তবে তার হেড কর্নারের বিনিময়ে প্রতিহত করেন আবাহনীর গোলরক্ষক মিতুল মারমা। ৮২ মিনিটে দলকে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ পান এবার সোহেল। কিন্তু বক্সের মধ্যে থেকে যে শটটা নিলেন বাংলাদেশি মিডফিল্ডার তা আবাহনীর গোলবারের ওপর দিয়ে চলে যায়।
আবার ৮৫ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে সাদ উদ্দিন শট নিলে তা তালুবন্দি করতে সমস্যা হয়নি গোলরক্ষক মিতুলের। তবে মিনিট দুয়েক পর এগিয়ে যাওয়ার দুর্দান্ত সুযোগ পেয়েছিল আবাহনী। রাফায়েল অগুস্তোর ফ্রি কিকে শুধু পা টা ঠিক মতো লাগিয়ে দিতে পারলেই হতো। কিন্তু সেই কাজটাই ঠিক মতো করতে পারলেন না শাকিল হোসেন।
৮৯ মিনিটে অগুস্তো আরেকটি সুযোগ তৈরি করেন। কিন্তু এবার যে সুযোগটা তৈরি করেছিলেন তাতে আবাহনী নিজেদের কপাল পোড়া ভাবতেই পাড়ে। কেননা আবাহনীর ফরোয়ার্ডের নেওয়া ক্যাটব্যাকটা যথাসময়ে পাইলেই শটটা জালেই নিতে পারতেন সুমন রেজা। কিন্তু বৃষ্টির পানিতে বল আটকিয়ে যাওয়ায় পাসটা সঠিক সময়ে তার পায়ে আসেনি। তাতে পড়ে গিয়ে কোনোরকমে শটটা নিলেও সেটি গোলরক্ষকের সামনে গিয়ে আবার আটকিয়ে যায়। তা ধরতে আর অসুবিধা হয়নি বসুন্ধরার গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণের।
পরে আর কোনো গোল না হলে অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ফাইনাল। তবে অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধ যখন শেষ হওয়ার পথে ঠিক তখনই বড় ধাক্কা খায় বসুন্ধরা। ১০৩ মিনিটের সময় অযথা সুমনকে ফাউল করেন বদলি নামা ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। তার শাস্তি হিসেবে সরাসরি লাল কার্ড দেখান রেফারি সাইমন। এতে শেষ ১৭ মিনিট ১০ জন পরিণত হয় বসুন্ধরা। তবে অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধ শেষ হলে আর খেলা গড়ায়নি মাঠে। আলোকস্বল্পতার কারণে ময়মনসিংহে ম্যাচ শেষ করতে বাধ্য হয়েছেন রেফারি।
আরও পড়ুন: