ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের পর অন্তবর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবীদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার মেগাফোন কূটনীতিতে চাপের মুখে পড়েছে ভারত। এর ফলে এক মাসের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে কিছুটা ভাটা পড়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আশ্চর্য হয়েছে ভারত।
বর্তমানে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক কোন পর্যায়ে রয়েছে তা বিশ্লেষণ করেছেন বিবিসির দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সম্পাদক আনবারাসান ইথিরাজান।
ভারতপন্থী শেখ হাসিনা দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকাকালীন ভারত ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পর্কের দিক দিয়ে সবচেয়ে ভালো সময় পার করেছে। এছাড়া শেখ হাসিনা ভারত বিরোধী গোষ্ঠীকে কঠোর হাতে দমন এবং সীমান্তের অমিমাংসীত কিছু বিষয় নিষ্পত্তি করার ফলে নিরাপত্তার দিক দিয়েও ভারত সবচেয়ে বেশি সুবিধা পেয়েছে।
তবে শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে যাওয়ার পর ভারত ও বাংলাদেশের গভীর সম্পর্কের মধ্যে এক জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
গত সপ্তাহে ভারতীয় সংবাদসংস্থা পিটিআইকে সাক্ষাৎকার দেন ড. ইউনূস। সাক্ষাৎকারে তিনি দিল্লিতে থাকাকালীন সময় হাসিনাকে কোনো ধরনের রাজনৈতিক বিবৃতি দেয়া থেকে বিরত রাখতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানান। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তাকে দেশে ফিরিয়ে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য চাপ বাড়ছে।
ওই সাক্ষাৎকারে ইউনূস বলেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বজায় রাখতে আমাদের এক সঙ্গে কাজ করা উচিত। যদিও এ সম্পর্ক বর্তমানে তলানিতে রয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় সাক্ষাতকারে।
যদিও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. ইউনূসের এমন মন্তব্যে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে তারা খুবই হতাশ হয়েছেন।
ভারতের সরকারি এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভারত বাংলাদেশের পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখছে। পরিস্থিতির উন্নতির জন্য অপেক্ষা করছে তারা। এছাড়া নয়াদিল্লি এসব মন্তব্যের বিষয়গুলো নথিভুক্ত করছে।
ভারতের সাবেক এক কূটনীতিক বলেন, মেগাফোন কূটনীতির মাধ্যমে ড. ইউনূস দুই দেশের অমীমাংসিত বিষয়গুলো মিডিয়ার সামনে আনার মাধ্যমে ভারতকে চাপে রাখার চেষ্টা করছেন।
ঢাকা নিযুক্ত সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার বীণা সিক্রি বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে ভারতের নির্দেশনা রয়েছে। সাবেক এই কূটনীতিক বলেন, কোন ভিত্তিতে ড. ইউনূস ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তলানিতে রয়েছে তা স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন: