চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারের খবর দ্রুতগতিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। তার মুক্তি চাই শীর্ষক শ্লোগানে পোস্টারও তৈরি হয়েছে। বিষয়টি শুধু বাংলাদেশেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, ভারতেও ব্যাপকভাবে প্রচার পাচ্ছে। দেশটির প্রায় সবকটি গণমাধ্যমের অনলাইন সংস্করণে ফলাও করে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের খবর ছাপা হচ্ছে। সোমবার রাতে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলীয় নেতা ও বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীও রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের হিন্দুদের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষার লড়াইয়ের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে ড. ইউনূসের সরকার গ্রেপ্তার করেছে। আমরা এই খবরটি পেয়ে অত্যন্ত বিচলিত এবং চিন্তিত। আমরা তার নিঃশর্ত মুক্তি চাইছি। তাকে মুক্তি না দিলে কলকাতার বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনে বিক্ষোভ হবে এবং বাংলাদেশ সীমান্তে সনাতনীরা ধ্বজ নিয়ে অবরোধ করবে, যাতে বাংলাদেশে পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে ভারতের কোনো পরিষেবা দিতে দেব না।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। পরিষদের সভাপতিত্রয় ঊষাতন তালুকদার,অধ্যাপক নিমচন্দ্র ভৌমিক ও নির্মল রোজারিও এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ এ প্রতিবাদ জানান। নেতৃবৃন্দ বলেন, এ গ্রেপ্তারের ফলে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার প্রশ্নে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি বিশ্বে ক্ষুণ্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারা অনতিবিলম্বে প্রভু চিন্ময় কৃষ্ণ চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারীকে জাতীয় স্বার্থে মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদও বিবৃতিতে চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারে উদ্বেগ ও শঙ্খা প্রকাশ করেছে। পূজা পরিষদ বিবৃতিতে বলেছে, চিন্ময় প্রভু সনাতনীদের আটদফা দাবি নিয়ে আন্দোলন করছিলেন। তার এই আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধে নয়।
চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য ঢাকার হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে উড়ানের অপেক্ষা করছিলেন। এর মধ্যেইআচমকা গ্রেপ্তার হলেন আলোচিত সন্ন্যাসী ও ধর্মীয় নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস (চিন্ময় প্রভু)। তিনি আলোচিত হিন্দু সংগঠন ইসকনের অন্যতম সংগঠক। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে তিনি চিন্ময় প্রভু নামে পরিচিত। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ।
সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা ডিবি তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের সময় তিনি শান্ত ছিলেন এবং ডিবি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের বিরোধ করেননি। তবে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম উত্তাল হয়েছে। আর রাতে ঢাকার শাহবাগে সনাতনীদের অবরোধ কর্মসূচিতে স্থানীয়রা হামলা করেছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় সাধারণ সনাতনীরা আন্দোলন শুরু করলেও ইসকন এখনো কোনো কর্মসূচি দেয়নি। ঢাকায় ইসকনের মুখপাত্র জয় মহাপ্রভু দাস ভোরের কাগজকে বলেন, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর মুক্তির দাবিতে কর্মসূচি দেয়া হবে কি না তা ইসকনের ঊর্ধ্বতনরা এখনো জানাননি।
আরও পড়ুন: