বৃহস্পতিবার

১২ ডিসেম্বর, ২০২৪
২৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১
১০ জামাদিউছ ছানি, ১৪৪৬

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেছে আরএসএস

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১৪:২১

শেয়ার

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেছে আরএসএস
ছবি: সংগৃহীত

কথিত ‘হিন্দু নিপীড়নের’ অভিযোগে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল চলছে। মঙ্গলবার দেশটির উগ্রপন্থী কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএসের সমর্থনে সিভিল সোসাইটি অব দিল্লির ব্যানারে এই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।

ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) আদর্শিক গুরু এই সংগঠনটি গত শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলন করে ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ হাইকমিশন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেয়। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া বলেছে, সুশীল সমাজের সদস্যদের প্রতিবাদ মিছিলের ঘটনায় দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। দিল্লি পুলিশের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘‘বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে আমরা বাংলাদেশ হাইকমিশনের বাইরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছি। কাউকে আইনশৃঙ্খলা লঙ্ঘন করতে দেওয়া হবে না।’’

এদিকে, মঙ্গলবার বেলা ১২টার পর দিল্লির চাণক্যপুরী থানার তিন মূর্তি চক থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়েছে। বিবিসি বাংলার শুভজ্যোতি ঘোষ জানিয়েছেন, মিছিলে তিন থেকে চার হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেছেন। সেখানে বিভিন্ন বয়সী পুরুষদের পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ নারীও যোগ দিয়েছেন। তবে তাদেরকে শেষ পর্যন্ত দূতাবাস পর্যন্ত যেতে দেওয়া হবে কি না, সেটি স্পষ্ট না। কারণ রাস্তায় ব্যারিকেড আছে। তাই তারা এক এখন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে স্লোগান দিচ্ছেন।

বিক্ষোভ মিছিলে প্রায় সবার হাতেই প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে। প্ল্যাকার্ডে ‘‘বাংলা বাঁচাও, বাঙালি বাঁচাও, বাঁচাও সনাতন!’’, ‘‘বাংলাদেশ, একাত্তর মনে করো, জুলুমবাজি বন্ধ করো! সেভ বাংলাদেশি হিন্দুজ’’ লেখা কিছু স্লোগানও দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেছেন, অন্তত গত এক যুগে দিল্লির বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে ভারতীয়দের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়নি। এই বিক্ষোভ বহু বহু বছরের মধ্যে প্রথমবার। এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে আরএসএস নেতা রজনীশ জিন্দাল, ভারতের সাবেক ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো চিফ রাজীব জৈন, ঢাকাতে সাবেক রাষ্ট্রদূত ভিনা সিক্রিও থাকবেন বলে জানা গেছে।

গত শুক্রবার আরএসএসের দিল্লি শাখার গণমাধ্যম ও যোগাযোগ বিভাগের সহ-প্রধান রজনীশ জিন্দাল সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ হাইকমিশন ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষনা করেন। ওই দিন তিনি বলেছিলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের দিন আগামী ১০ ডিসেম্বর ‘দিল্লির নাগরিক সমাজের’ ব্যানারে বাংলাদেশ দূতাবাসে পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।’’

তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশে হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে চলমান নিপীড়নের ঘটনায় সমগ্র দেশ (ভারতের জনগণ) ক্ষুব্ধ এবং উদ্বিগ্ন। জিন্দাল বলেন, ‘‘বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার ঘটনায় আমরা ১০ ডিসেম্বর দিল্লিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে একটি প্রতিবাদ মিছিল করব।’’

দেশটির কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএসের এই নেতা বলেন, দিল্লিতে ২০০টিরও বেশি সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধিরা প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দেবেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বাংলাদেশ দূতাবাসে স্মারকলিপি জমা দেব। আমরা বাংলাদেশে হিন্দুদের বিরুদ্ধে চলমান নৃশংসতা ও সহিংসতা বন্ধে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করার দাবি জানিয়ে জাতিসংঘ, ইউএনএইচআরসি, ডব্লিউএইচও, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং এডিবিসহ সকল আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছেও স্মারকলিপি জমা দেব।