ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে জাতিসংঘের আরও ৪ জন বিদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। দেশটির পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহী এম-২৩ গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন তারা।
এতে করে দেশটিতে নিহত শান্তিরক্ষীদের সংখ্যা ১৭ জনে পৌঁছেছে। সর্বশেষ নিহত চার শন্তিরক্ষীই দক্ষিণ আফ্রিকান সৈন্য বলে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
বার্তাসংস্থাটি বলেছে, এম-২৩ বিদ্রোহীরা গোমা বিমানবন্দরে মর্টার বোমা হামলা চালিয়েছে এবং সোমবার দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সের তিন সদস্যকে হত্যা করেছে। এ ছাড়া বিদ্রোহীদের সাথে লড়াইয়ে আরেক শান্তিরক্ষীও নিহত হয়েছেন বলে দক্ষিণ আফ্রিকান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন তার প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
গোমায় গত সপ্তাহে শুরু হওয়া বিদ্রোহীদের আক্রমণে সাউথ আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট কমিউনিটির আঞ্চলিক বাহিনী এবং কঙ্গোতে জাতিসংঘ মিশনের অন্তত ১৭ শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। রুয়ান্ডা সীমান্তবর্তী গোমা শহর থেকে পাওয়া আগের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কঙ্গোর সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৫ জন নিহত ও আরও ৩৭৫ জন আহত হয়েছেন।
কঙ্গো ইতোমধ্যেই প্রতিবেশী রুয়ান্ডার সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে, বিদ্রোহের পেছনে তারাই সমর্থন দিচ্ছে বলে দেশটিকে অভিযুক্ত করেছে। রুয়ান্ডা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। অন্যদিকে এম-২৩ গোষ্ঠীর দাবি, তারা সংখ্যালঘু কঙ্গোলি তুতসিদের স্বার্থ রক্ষা করছে। রুয়ান্ডার তুতসি সম্প্রদায়ের সাথে তাদের জাতিগত সম্পর্কের জন্য বৈষম্যের শিকার হতে হয় বলেও অভিযোগ করেছে তারা।
এদিকে শান্তিরক্ষীদের মধ্যে সর্বশেষ হতাহতের ঘটনার মধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা গত সোমবার রাতে রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামের সাথে টেলিফোনে কথা বলেছেন। তারা পূর্বাঞ্চলীয় কঙ্গোতে চলমান সংঘাত এবং শান্তিরক্ষীদের মৃত্যু ও সংঘাতের বৃদ্ধি নিয়েও আলোচনা করেছেন।
রামাফোসার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দুই রাষ্ট্রপ্রধান জরুরিভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির প্রয়োজন এবং সংঘাতে জড়িত সব পক্ষের শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরু করার বিষয়ে একমত হয়েছেন’
অবশ্য ইতোমধ্যেই গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের পূর্বাঞ্চলের বৃহত্তম শহর গোমার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার দাবি করেছে রুয়ান্ডা-সমর্থিত দেশটির জাতিগত তুতসি নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহী গোষ্ঠী এম-২৩।
সংঘাত থেকে প্রাণে বাঁচতে হাজার হাজার মানুষ শহর ছেড়ে পালিয়েছেন এবং বিভিন্ন কারাগারে হামলার পর আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। এই ঘটনায় কয়েক হাজার কারাবন্দি পালিয়েছেন বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: