বৃহস্পতিবার

৬ মার্চ, ২০২৫
২২ ফাল্গুন, ১৪৩১
৭ রমজান, ১৪৪৬

টিউলিপের দুর্নীতি তদন্তে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে যুক্তরাজ্য

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ৫ মার্চ, ২০২৫ ১৯:৩১

শেয়ার

টিউলিপের দুর্নীতি তদন্তে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে যুক্তরাজ্য
টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ও শেখ পরিবারের ব্যাপক দুর্নীতির সঙ্গে নাম উঠে আসার প্রেক্ষাপটে মন্ত্রীত্ব ছাড়তে বাধ্য হন ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। এরপর থেকেই তার বিরুদ্ধে তদন্ত করতে যুক্তরাজ্য সরকারকে আহ্বান জানিয়ে আসছে ঢাকা। সেই আহ্বানে এবার সাড়া দিতে যাচ্ছে দেশটির জাতীয় অপরাধ সংস্থা (এনএসি)। এমনটাই জানিয়েছে লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ।

বুধবার এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যমটি বলেছে, ব্রিটিশ এমপি ও শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের দুর্নীতির তদন্ত করতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পারে যুক্তরাজ্য। কীভাবে ঢাকাকে সহায়তা করা যায়, এ ব্যাপারে এখন ভাবছেন তদন্তকারীরা।

এর আগে স্কাইকে দেয়া সাক্ষাৎকারে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানান, টিউলিপ সিদ্দিক দুর্নীতি করেছেন এবং এজন্য তার বিচার হওয়া উচিত। ড. ইউনূসের এই সাক্ষাৎকারের পরই জানা গেল, বাংলাদেশকে সহায়তা করার ব্যাপারে ভাবছেন ব্রিটিশ তদন্তকারীরা। বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ যুক্তরাজ্যে গেছে কিনা তা খতিয়ে দেখবেন তারা।

স্কাই নিউজ জানিয়েছে, বাংলাদেশকে ‘মস্ত দুর্নীতির’ তদন্তে সহায়তা করবে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী সহযোগী কেন্দ্র (আইএসিসিসি)। এটি যুক্তরাজ্যের জাতীয় অপরাধ সংস্থা (এনএসি) দ্বারা পরিচালিত এবং সংস্থাটির অর্থায়ন করে যুক্তরাজ্যের সরকার।

গতবছরের অক্টোবর ও নভেম্বরে যুক্তরাজ্যের জাতীয় অপরাধ সংস্থার কর্মকর্তারা বাংলাদেশ ঘুরে যান। সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, টিউলিপ সিদ্দিক ও অন্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর তারা বাংলাদেশে আসেন। এরপর থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল তারা সাবেক সিটি মিনিস্টারের অবৈধ সম্পদের বিষয়ে অনুসন্ধান করবেন।

স্কাই নিউজ তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই অনুসন্ধানের অর্থ এই নয়, ব্রিটিশ সংস্থাগুলো টিউলিপের বিরুদ্ধে আলাদা তদন্ত করছে এবং তারা বিশেষ কোনো কিছুতে সহায়তা করছে। তবে তদন্তে সাহায্য করার যে আগ্রহ তারা দেখিয়েছে, এটি প্রমাণ করছে আওয়ামী আমলে আত্মসাৎ করা অর্থ ব্রিটেনে পাচার করা হয়েছে কি না সেটি অনুসন্ধান করবে তারা।

এদিকে টিউলিপ সিদ্দিকের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তিনি তার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি কোনো অবৈধ সম্পদ অর্জন করেননি। উপহারের ফ্লাটের বিষয়ে না জানানোটা ছিল একটি তথ্যগত ভুল এবং এ ব্যাপারে তদন্তের বিষয়ে তার সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপরই টিউলিপের দুর্নীতির বিষয়টি সামনে আসে।

ওই সময় জানা যায়, হাসিনা ঘনিষ্ঠের কাছ থেকে লন্ডনে মাল্টিমিলিয়ন ডলার মূল্যের ফ্ল্যাট উপহার নিয়েছেন টিউলিপ। কিন্তু তিনি এ তথ্য লুকিয়েছেন। বিষয়টি পরে ফাঁস হলে গত জানুয়ারিতে ব্রিটিশ সরকারের মন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হন টিউলিপ।

 

এ ছাড়াও বাংলাদেশে অবকাঠামোগত ব্যয় থেকে শেখ হাসিনার পরিবারের ৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ড পর্যন্ত আত্মসাতের অভিযোগের তদন্তে টিউলিপের নাম এসেছে। দুর্নীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার এসব অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর চাপের মুখে পড়েছেন টিউলিপ। অনেকেই মনে করছেন যুক্তরাজ্যে টিউলিপের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার হয়ত শেষ হচ্ছে।

banner close
banner close