
তুরস্কে দায়িত্ব পালনকালে যুক্তরাজ্যের সরকারি সংবাদমাধ্যম ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (বিবিসি) সাংবাদিক মার্ক লোয়েন গ্রেপ্তার হয়েছেন। পরে তাকে যুক্তরাজ্যে ফেরত পাঠিয়েছে তুরস্ক। গতকাল বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানায় বিবিসি। এর আগে বুধবার ইস্তাম্বুলে গ্রেপ্তার হন লোয়েন।
গত সপ্তাহে ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুর গ্রেপ্তারের পর যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল, সে সম্পর্কে প্রতিবেদন করার জন্য লোয়েন বেশ কয়েকদিন ধরে তুরস্কে ছিলেন। তুরস্কের প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম বিক্ষোভের খবর এড়িয়ে গেলেও বিবিসি সেসবের ছবি-ভিডিও ও বর্ণনা প্রকাশ করছিল। বিক্ষোভের এসব চিত্র সংগ্রহ করছিলেন লোয়েন।
ইমামোগলুকে দুর্নীতির অভিযোগে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
২০২৮ সালের নির্বাচনে ইমামোগলুকে তার দল প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত করে। তাকে বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ জন্যই রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় এরদোয়ান ইমামোগলুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন বলে মনে করে বিরোধী দলগুলো।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বিবিসি জানিয়েছে, ‘আজ সকালে (২৭ মার্চ) তুর্কি কর্তৃপক্ষ বিবিসি সংবাদ প্রতিনিধি মার্ক লোয়েনকে ইস্তাম্বুল থেকে বহিষ্কার করেছে। আগের দিন তাকে তার হোটেল থেকে তুলে নিয়ে ১৭ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।’
বৃহস্পতিবার সকালে একটি লিখিত নোটিশ তার হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়। যাতে ‘জনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি’ উল্লেখ করে লোয়েনকে তুরস্ক থেকে বের করার কথা বলা হয়।
মার্ক লোয়েন বলেন, ‘আমি যে দেশে পাঁচ বছর ধরে বসবাস করেছি এবং যে দেশের প্রতি আমার এত ভালোবাসা রয়েছে সেখান থেকে আমাকে আটক করে ফেরত পাঠানো অত্যন্ত বেদনাদায়ক। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং নিরপেক্ষ প্রতিবেদন যে কোনো গণতন্ত্রের জন্য মৌলিক অধিকার।’
এ বিষয়ে বিবিসির সংবাদ বিভাগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডেবোরা টার্নেস বলেন, এটি একটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক ঘটনা। আমরা তুর্কি কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানাব। মার্ক একজন অত্যন্ত অভিজ্ঞ সংবাদদাতা যার তুরস্ক সম্পর্কে গভীর জ্ঞান রয়েছে। কোনো সাংবাদিককে কেবল তাদের কাজ করার জন্য এই ধরনের আচরণের মুখোমুখি হতে হবে, তা মানা যায় না। আমরা তুরস্কের ঘটনাবলি সম্পর্কে নিরপেক্ষ ও ন্যায্যভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করা চালিয়ে যাব।
আরও পড়ুন: