বৃহস্পতিবার

২৪ এপ্রিল, ২০২৫
১১ বৈশাখ, ১৪৩২
২৭ শাওয়াল, ১৪৪৬

সার্জিক্যাল স্ট্রাইক:ভারতকে পাইলট অভিনন্দনের পরিণতির কথা স্মরণ করালো পাকিস্তান

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৪ এপ্রিল, ২০২৫ ১৬:৫৫

শেয়ার

সার্জিক্যাল স্ট্রাইক:ভারতকে পাইলট অভিনন্দনের পরিণতির কথা স্মরণ করালো পাকিস্তান
সার্জিক্যাল স্ট্রাইক:ভারতকে পাইলট অভিনন্দনের পরিণতির কথা স্মরণ করালো পাকিস্তান।

কাশ্মীরের পালগামে পর্যটকদের ওপর অস্ত্রধারীদের হামলার ঘটনায় আবারও উত্তপ্ত পাকিস্তান-ভারত রাজনীতি। কোনো ধরনের তদন্ত ও প্রমাণ উদঘাটন ছাড়াই অতিদ্রুত এই হামলার দায় পুরোপুরি ইসলামাবাদের ওপর চাপিয়েছে নয়াদিল্লি। যদিও এই হামলার নেপথ্যে কারা রয়েছে তার তথ্যপ্রমাণ দিতে পারেনি দেশটি।

অন্যদিকে, সাধারণ নাগরিকদের ওপর হামলা চালিয়ে কাদের ফায়দা নেয়ার সুযোগ রয়েছে তা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন ও জল্পনা রয়েছে। এটা সাজানো হামলা ছিল কিনা তা নিয়ে নানা প্রশ্ন ও মুসলিমবিরোধী উদ্বেগের বাস্তবসম্মত নানা কারণ তুলে ধরা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কারণ কাশ্মীরের বাসিন্দারা কখনই এই ধরনের হামলাকে সমর্থন করে না।  প্রতিবাদে সরবও হয়েছে তারা।

এদিকে, পাকিস্তানের ওপর দায় চাপানোর পর প্রত্যাঘাতে কি ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ চালাবে ভারত? এমন হাইপ তোলা হয়েছে ভারতীয় হুজুগে মিডিয়াগুলোতে। উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক উম্মাদনা তৈরি করেছে। এমতাবস্থায় ভারতের দিক থেকে কড়া পদক্ষেপের আশঙ্কায় ইতোমধ্যেই নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর হাই অ্যালার্ট জারি করেছে পাকিস্তান বিমান বাহিনী।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ গতকাল বুধবার এক সাক্ষাৎকারে এই ঘটনায় পাকিস্তানের জড়িত থাকার বিষয়টি স্পষ্টভাবে উড়িয়ে দিয়েছেন

হাম নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আসিফ ঘটনাটিকে ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’ (সাজানো হামলা) বলে অভিহিত করেন। তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে নাকচ করেন।

এসময় ভারত হামলা চালালে পাকিস্তান সামরিক জবাব দিতে সক্ষম হবে কিনা জানতে চাইলে আসিফ ২০১৯ সালে বালাকোটে ভারতীয় বিমান হামলা চালানোর কথা স্মরণ করিয়ে দেন।

সেসময় পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে গুলিবিদ্ধ ও আটক ভারতীয় পাইলটের কথা উল্লেখ করে আসিফ বলেন বলেন, ‘‘অভিনন্দনের সাথে কী ঘটেছিল তা সকলের মনে আছে।’’

এরআগে ২০১৯ সালের কাশ্মির উপত্যকার পুলওয়ামায় সেনাবাহী ট্রাকে আরডিএক্স বিষ্ফোরণে ৪০ জনের বেশি ভারতীয় সেনাসদস্য নিহত হয়েছিল। সে ঘটনার দায় পাকিস্তানের উপর চাপিয়ে ভারতীয় বিমান বাহিনী পাকিস্তানের বালাকোটে কথিত সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করেছিল। এসব নিয়ে তখন অনেক নাটকীয়তা ও ব্লেইমগেম দেখা গেছে। ভারতের অভ্যন্তরেও এ নিয়ে সরকারবিরোধীরা সমালোচনায় সরব হয়েছিল।

ওই ঘটনার পর পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার বালাকোটে জইশ ক্যাম্পে বিমানহানা চালায় ভারতীয় বিমান বাহিনী। তবে সেই স্ট্রাইক চালাতে গিয়ে বরং ভারতই বিপদে পড়ে। তাদের পাইলট অভিনন্দন বর্তমানকে ধরে ফেলেছিলো পাকিস্তান। যা ভারতের জন্য ছিলো খুবই বিব্রতকর। এতে নয়াদিল্লি বিমান বাহিনীর দুর্বলতাও পরিষ্কার হয়ে ওঠে। বিপরীতে ডগফাইটে কার্যত বিজয়ী হয়ে তাতে দেশে বীরের তকমা পায় পাকিস্তানের বিমান বাহিনী। তাই মোদিকে ভাবতেই হচ্ছে, আসলে তিনি কি করবেন?

কাশ্মিরের তৎকালীন রাজ্যপাল বিজেপি নেতা সত্যপাল মালিক পুলওয়ামা ঘটনার জন্য সরকারের ভুল সিদ্ধান্তকে দায়ী করে প্রকাশ্যে বিবৃতি দিলে মোদি ও অজিত দোভালরা তাকে মুখ বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানোর প্রমাণ দেয়ার জন্য ব্যাপক চাপের মুখে পড়ে মোদি সরকার।এমন প্রেক্ষাপটে ভারতীয় একজন রাজনীতিবিদ আক্ষেপ করে বলেই ফেলেন, জীবনের বেঁচে থাকলে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের কথা কখনও মুখে আনবেন না।

পুলওয়ামার ঘটনায় সে সময়ে চলমান লোকসভা নির্বাচনের প্রচারণায় পাকিস্তান ও মুসলিম বিদ্বেষ ছড়িয়ে হিন্দুত্ববাদী ন্যারেটিভ প্রচার করে ভোটের ফায়দা হাসিলের চেষ্টায় অনেকটা সফলও হয়েছিল বিজেপি।

ভারতীয় মিডিয়ার তথ্য মতে, ভারতের অভিযানের আশঙ্কায় গত রাত থেকেই ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চূড়ান্ত সতর্ক রয়েছে পাকিস্তান বিমান বাহিনী। সীমান্ত সংলগ্ন ক্যাম্পগুলো সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে। রাতভর রাওয়ালপিন্ডি ঘাঁটি থেকে আকাশে টহল দিয়েছে পাক যুদ্ধ বিমান। যাতে চট করে হামলা চালালে ভারতীয় আগ্রাসনের যথাযথ জবাব দিতে পারে পাকিস্তান।

 

banner close
banner close